AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ছাত্রলীগ, পুলিশ ও প্রশাসনে এত সাঈদী প্রেমিক এলো কোথা থেকে?


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১:০১ পিএম, ১৮ আগস্ট, ২০২৩
ছাত্রলীগ, পুলিশ ও প্রশাসনে এত সাঈদী প্রেমিক এলো কোথা থেকে?

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী, পুলিশ সদস্য ও প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে তার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। একইভাবে সমবেদনা জানিয়েন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিসহ তাদের পরিবার ও আত্বীয়-স্বজনরা। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে হতবাক মানুষ। প্রশ্ন উঠেছে ছাত্রলীগ, পুলিশ-প্রশাসনে হঠাৎ এত সাঈদী প্রেমিক এলো কোথা থেকে?

 

জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত সাঈদীর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করায় ছাত্রলীগের ৬৮ জন, তাঁতী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন শিক্ষক ও পুলিশ কর্মকর্তাও। মামলা হয়েছে জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে।

 

এ বিষয়ে আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মী শোক প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি আমাকে অবাক করেছে।’

 

সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ওপেন ডোর পলিসি বন্ধ করতে হবে। দলে লোক ঢুকানোর সময় অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে ঢোকাতে হবে।’

 

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, দলে হাইব্রিড নেওয়ার চেয়ে, দল কর্মীশূন্য থাকা ভালো। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মানতে হবে। সাঈদীভক্ত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’

 

সরকারি চাকরিজীবীদের কর্মকান্ড নিয়ে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মৃত্যুর পর পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু লোকও শোক প্রকাশ করেছে। এটা তাদের চাকরিবিধির লঙ্ঘন। সরকারি চাকরি করে তারা কখনোই একজন স্বাধীনতাবিরোধীর পক্ষে অবস্থান নিতে পারে না। এদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

 

সাঈদীকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া ছাত্রলীগের ছয় নেতাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া লোহাগাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের  ৯ নেতাকে বহিষ্কার। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার । জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের ১৯ নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার। নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীকে বহিষ্কার। সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতিকে অব্যাহতি। পাবনা জেলা ছাত্রলীগের ৭ জন নেতাকর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আহসান হাবীবকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে বগুড়া জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক রাশেকুজ্জামান রাজনের যৌথ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

 

চট্টগ্রামে শিক্ষকদের শাস্তি দাবি, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা সাজাপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের কয়েকজন শিক্ষক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন। তাদের এ স্ট্যাটাসে বিরূপ প্রক্রিয়া দেখা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে। এরই মধ্যে এক মাদরাসা শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার নাম আবু ছালেহ মো. জোবায়ের। তিনি চট্টগ্রামের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি বিভাগে (গণিত) অস্থায়ীভাবে কর্মরত ছিলেন।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ১৪ আগস্ট ফেসবুকে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর পক্ষে ও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস নিয়ে বিতর্কিত স্ট্যাটাস দেওয়ার দায়ে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- ভোলাহাট উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহনাজ শিমু, পোস্টদাতা উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের নিমগাছি এলাকার জমসেদ আলীর ছেলে ও ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সোহেল রানা, হোসেন ভিটা এলাকার আবদুস শুকুরের ছেলে বাইরুল ইসলাম, মুশরিভুজা-খড়কপুরের আলমাস আলীর ছেলে মিনহাজুল ও খড়কপুরের জাহির হোসেনের ছেলে সাগর আলী। বুধবার রাতে মামলাটি দায়ের করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব।

 

যুদ্ধাপরাধ মামলায় আজীবন দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের পরিদর্শক খাইরুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত। পোস্টটি নজরে আসার পর মহানগর পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার আরএমপির সাইবার ইউনিটকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। বুধবার দুপুরে আরএমপির সাইবার ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) উৎপল কুমার চৌধুরী পুলিশ কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

 

তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) পার্বত্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে তাকে বদলি করা হয়। খাইরুল আরএমপির প্রসিকিউশন বিভাগে কোর্ট ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন।

 

একুশে সংবাদ/ব/এসএপি

Link copied!