দেশ ও জাতি যখনই কোন সংকটে উপনীত হয়েছে, তখনই বীর মুক্তিযোদ্ধারা সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম (এমপি)।
সোমবার (৬ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিএনপি-জামাতের আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গী সন্ত্রাস ও হত্যাকান্ড মোকাবেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছে। বিএনপি জামাত আজ পুনরায় সন্ত্রাস, নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল ও প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সুষ্ঠু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী দল আওয়ামী লীগকে
ক্ষমতায় এনে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করার লক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাজ করার আহবান জানান এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম (এমপি)।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান (এম.পি)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাই বোনদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান (এমপি) নিম্নোক্ত করনীয় বিষয় তুলে ধরে বলেন,
১) প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তানসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে বিএনপি জামায়তের নৈরাজ্য, নাশকতা, যানবাহন পোড়ানো ভাংচুর ও মানুষ
হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
২) জনগণকে সংঘবদ্ধ করে গ্রাম-গঞ্জে, শহরে-নগরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সাথে পরামর্শ করে তাদের সাথে নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা।
৩) বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী মামলা দায়ের করা।
৪) বিএনপি-জামাতের অপকীর্তি জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য সভা সমাবেশ মিছিল ইত্যাদি আয়োজন করা।
৫) গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা।
৬) বীর মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানিত মানুষ। তারা মানুষের সামনে কোন বিষয় তুলে ধরলে তা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিএনপি-জামায়াতের অপকীর্তি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড,
নাশকতা, পুলিশ, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ হত্যা করা, আহত করা, যানবাহন পোড়ানো, ভাংচুর ইত্যাদি বিষয় জনগণের সামনে তুলে ধরে জনগণকে সংঘবদ্ধ করা।
৭) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড মানুষের সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরা।
৮) যুবক তরুনদের নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন সভা সমাবেশ বৈঠক করে তাদের আন্দোলন ও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা। ‘তরুনের প্রথম ভোট স্বাধীনতার পক্ষে হোক` এই শ্লোগানের ভিত্তিতে তাদের ঐকবদ্ধ করে আন্দোলন ও নির্বাচনে তাদের অংশ গ্রহণ করা।
৯) আসন্ন নির্বাচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নৌকা প্রতিকে মনোনয়ন দেবেন সকলকে সাথে নিয়ে সেই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে বিজয় নিশ্চিত করা।
১০) নির্বাচনের দিন সর্বক্ষণ ভোট কেন্দ্রে ভোটার আনার কাজে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সাথে সবাইকে ব্যস্ত রাখা।
১১) ভোট কেন্দ্রে বিএনপি জামাত বা অন্য কেউ যাতে কোন হাঙ্গামা করতে না পারে সেজন্য সর্বদা সতর্ক থাকা।
১২) ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্র ত্যাগ না করা।
এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর সদস্য সচিব ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক মহাসচিব (কল্যাণ ও পুনর্বাসন) ও বাংলাদেশ শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলাউদ্দিন মিয়া।
বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এর যুগ্ন সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন এ.বি.এম. সুলতান আহমেদ সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, জেলা, মহানগর, উপজেলা ও প্রাতিষ্ঠানিক ইউনিট কমান্ডের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন সারা বাংলাদেশ থেকে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা।
একুশে সংবাদ/রাফি/বাবু/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :