সম্প্রতি রাজধানীতে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বছরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি হতাহতের সংখ্যাও হয়েছে অনেক।
বাংলামোটরে রাহাত টাওয়ারে আগুন-
গেল ৬ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে রাহাত টাওয়ারে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। প্রায় দেড় ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
গ্রিন রোডে বহুতল ভবনে আগুন-
চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর গ্রিন রোডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। আর এস টাওয়ার নামে ১৪তলা ওই ভবনের পাঁচতলায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস আ্যন্ড সিভিল ডিফেন্সের চারটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তেজগাঁওয়ে কারওয়ান বাজার মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আগুন-
একই বছরের ১৩ জানুয়ারির রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কারওয়ান বাজার মোল্লাবাড়ি বস্তিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ এই আগুনে পুড়ে যায় বস্তিতে থাকা অন্তত তিন শতাধিক ঘর।
পুরানা পল্টনে বহুতল ভবনে আগুন-
এরপর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনে তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজায় আগুন লাগে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ৪৫ মিনিট পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গুলিস্তানের নবাবপুর রোডে ভবনে আগুন-
২৯ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর গুলিস্তানের নবাবপুর রোডে চারতলা একটি ভবনে আগুন লাগে। পরে সিদ্দিক বাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাঁচটি ইউনিটের প্রচেষ্টায় রাত ২টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
লালবাগে জুতার কারখানায় আগুন-
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ১২ মিনিটের দিকে লালবাগের পোস্তার ঢাল এলাকার একটি জুতার কারখানায় আগুন লাগে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা জানা যায়নি।
বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুন-
এরপর ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়।
গাউসুল আজম মার্কেটে আগুন-
রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকায় অবস্থিত গাউসুল আজম মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। শনিবার (০২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ২টি ইউনিট গিয়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তিনি বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টায় গাউসুল আজম মার্কেটের দোকানে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় বিকেল ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
হাতিরপুল কাঁচাবাজারে ছয়তলা ভবনে আগুন-
এরপর ১৪ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে ছয় তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুরান ঢাকায় একটি প্রিন্টিং প্রেসে (ছাপাখানা) আগুন-
রাজধানীর পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলি ঘি পট্টি এলাকার একটি প্রিন্টিং প্রেসে (ছাপাখানা) শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট। তবে ওই আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বারিধারায় ডিপ্লোমেটিক জোনের বহুতল ভবনে আগুন-
গেল ১৭ মার্চ রাত ১টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় ডিপ্লোমেটিক জোনে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
ডেমরার ভাঙ্গাপ্রেসে কাপড়ের গোডাউনে আগুন-
এরপর ২১ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ডেমরার ভাঙ্গাপ্রেসে কাপড়ের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে।
চকবাজারের ইসলামবাগে সাততলা রাসায়নিক গুদামে আগুন-
এদিকে গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ৩টায় চকবাজারের ইসলামবাগে সাততলা রাসায়নিক গুদামে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে পরদিন সকাল ৬টায়।
গুলশানে বাণিজ্যিক ভবন ও চকবাজারে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন-
তারপর ২৩ মার্চ বিকেলে রাজধানীর গুলশানে একটি বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহত কিংবা বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে শনিবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর চকবাজারের ইসলামবাগ এলাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
কড়াইল বস্তিতে আগুন-
রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫ মিনিটের দিকে রাজধানী ঢাকার কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট টানা দুই ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় বস্তির প্রায় ২০০টির মতো ঘর পুড়ে গেছে। এই আগুনে ঘর ছাড়া হয়েছেন অনেকে।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :