৭১’র স্বাধীনতা বিরোধী-রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, তাদের সন্তানদের সরকারি চাকরীতে না এবং নাগরিক অধিকার সংকোচনসহ রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা। একইসঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নিজেদের রাজাকার দাবি করা স্বাধীনতার নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী বলে মনে করেন নেতারা। রোববার (১৪ জুলাই) কোটা আন্দোলনকারীরা টিএসসি এলাকা ত্যাগ করার পর দিবাগত রাতে একই জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ দলীয় কার্যালয়ে কোটাবিরোধী সমাবেশে নিজেদের রাজাকার এবং স্বাধীনতাবিরোধী স্লোগানের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল উত্তরসমাবেশে নেতারা এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সতর্ক অবস্থানে নগর আওয়ামী লীগ: কোটা আন্দোলনে মিছিল ঘিরে মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। এতে উপস্থিত রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সহভাপতি ডাক্তার দীলিপ রায় ও হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্মসাধারন সম্পাদক মিরাজ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির ও আক্তার হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু, কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও ৫৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকাশ কুমার ভৌমিক, বৃহত্তর ডেমরা থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কৌশিক আহমেদ জসিম, ৬৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল হাসান পলিন প্রমূখ। এদিন কোনো প্রকার ঘোষণা ছাড়াই সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন থানা ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আসেন। এ সময় থানা-ওয়ার্ড তেকে আগত নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থান নিয়ে কোটা বিরোধীদের বিরুদ্ধে পাল্টা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে একটি সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সহভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন বলেন, ঢাকায় কোনো অপশক্তিকে বিশৃঙ্খলা করতে দেব না। আমরা রাজপথে ছিলাম আছি, রাজপথে থাকবে। একইসঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা-নাশকতা রুখে দিতে আমরা মাঠে আছি এবং থাকবো।
তিনি আরও বলেন, যতই লাফালাফি করেন কোনো লাভ হবে না। আমরা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে আপনাদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মাঠে আছি এবং মাঠে থেকেই নেতাকর্মীদের নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো। ঢাকা মহানগর দক্ষিন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির বলেন, যতদিন জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশ; নিরাপদ বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, আজকে যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নিজেদের রাজাকারের ধুসর হিসেবে স্লোগান দিয়েছে, আমাদেরও আর বুঝতে বাকী নেই-তারা প্রকৃতপক্ষে রাজাকারের সন্তান এবং তাদের নাতি-পুতি। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে হলে রাজাকারের পূণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা সংকুচিতসহ তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আকাশ কুমার ভৌমিক বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে প্রতিটি আন্দোলনে জামায়াত এদেশের বিরোধিতা করেছে। আজ পর্যন্ত তাদের সেই দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে রাজাকারদের সন্তানদের সরকারের সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে চিরতবে বিদায় জানাতে হবে।
এদিকে টিএসসি এলাকায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে। এছাড়া টিএসসিতে রাজাকার বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদেরও দেখা যায়।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :