শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের যৌক্তিক দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেরকে নৃশংসভাবে আহত করেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে আহত করা ‘কাপুরুষোচিত’ ও ‘ন্যাক্কারজন’। অবশ্যই এ ধরণের পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদেরকে শাস্তি পেতেই হবে।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে তিনি আহত শিক্ষার্থীদের আশু সুস্থতা কামনা করেন এবং গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়েই এই হিংস্র হামলা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিকে রক্তাক্ত পন্থায় দমনের যে দৃশ্য দেশবাসী অবলোকন করল তা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আরেকটি হিংস্র অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে সংযোজিত হবে। এদের হাতে জনগণ, রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব কখনোই নিরাপদ নয়। পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরানোর বীরত্বে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আত্মহারা। দমন-পীড়ণের ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন করে তারা দেশবাসীকে নিথর—নিস্তব্ধ করতে চায়। আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের ওপর যেভাবে স্টিমরোলার চালাচ্ছে, ঠিক একইভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীর চলমান আন্দোলনকে দমনের পন্থা গ্রহণ করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ পুলিশ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৈশাচিক হামলা চালিয়ে অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে। কোটা সংস্কারের ন্যায্য দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রাজপথের উত্তাল আন্দোলনে সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে, সেজন্যই আন্দোলন দমাতে এখন রাষ্ট্রশক্তি নির্দয়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চিরাচরিত বৈশিষ্ট। কোটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ডামি আওয়ামী সরকার ক্রমাগত প্রতারণা করে যাচ্ছে, কারণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পর চলতি বছর পুনরায় ভিন্ন কায়দায় কোটা পুনর্বহাল করলেন।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম আঘাত করতে যারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ছাত্রলীগ গুণ্ডাদের লেলিয়ে দেয় তারা মানবতাবিরোধী ও মনুষ্যত্বহীন। দুর্নীতি ও হানাহানি যাদের অবলম্বন তারা কলেজ—বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনেও শঙ্কিত হয়ে পড়ে। কারণ লুটপাটের ভাবধারায় চালিত সরকারের দ্বারা কখনোই নানা শ্রেণী—পেশার মানুষের কোন অংশেরই অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই সম্মিলিত কণ্ঠের আওয়াজকে নিস্তব্ধ করতে তারা ভয়ঙ্কর হিংস্রতার পথ বেছে নেয়।
একুশে সংবাদ/য.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :