বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০০ জন পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। এসব শ্রমিক হত্যার বিচার, দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত, হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে ৮০০ (একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে ৮৭৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে) মানুষ জীবন দিয়েছেন। তাদের মধ্যে পোশাকশ্রমিক ২০০ জন। তাই এটাকে শুধুমাত্র ছাত্র গণঅভ্যুত্থান না বলে ছাত্র-শ্রমিক গণঅভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসন আমলে দেশ থেকে পাচার হয়েছে ১৫ লাখ কোটি টাকা। আর এই ১৫ বছরে দেশবাসীর ঘাড়ে চেপেছে ১৮ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণের বোঝা। এই টাকা ফেরত আনাসহ দেশের মানুষকে বিদেশি ঋণের বোঝা মুক্ত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে এখনই আলাপ-আলোচনা শুরু করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’
আমিরুল হক আমিন আরও বলেন, ‘গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে মজুরি বৃদ্ধি, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বাদ দেওয়া, নিয়োগে নারী-পুরুষ বৈষম্য, অন্দোলনকারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলত ব্যবস্থা না নেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী, কালিয়াকৈর, চন্দ্রা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। কোথাও কোথাও কারখানা ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমারা দেখেছি বহিরাগতরা শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন।’
এসময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো:
১. অবিলম্বে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের ৮ সদস্যসহ সব শ্রমিক হত্যার বিচার, দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২. নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. আহত শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় এবং উচ্চতর চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গত মজুরি আন্দোলনে ২০ হাজার পোশাকশ্রমিকের নামে দায়ের করা ৪৩ মামলাসহ শ্রমিকদের নামে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৫. সব কারখানায় সাত কর্মদিবসের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :