বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিকদের পূর্ণ অধিকার আদায়ে শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফেডারেশনের উদ্যোগে পোশাক ও ঔষধ শিল্পে চলমান অস্থিরতা নৈরাজ্য বন্ধে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, জাতীয় শ্রমিক ঐক্যের সভাপতি এ এম ফয়েজ হোসেন, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহারাইনে সুলতান বাহার, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহাতাব উদ্দীন শহীদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার ও বাংলাদেশ সংযুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ফেরদৌসী বেগম, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তার, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল হাসান নয়ন।
এছাড়াও গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার-আশুলিয়ার বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমেদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন প্রমুখ।
আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক নেতারা ঐক্যবদ্ধ হলে শ্রমিকদের দুর্দশা লাঘব করা যাবে। মেহনতি শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও পূর্ণ অধিকার আদায়ে আমরা সদা সজাগ থাকবো।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, এদেশের মালিকরা শ্রমিকদের মানুষ মনে করে না। এমনকি সরকার-রাষ্ট্র শ্রমিকদের মূল্য দেয় না। যার ফলে শ্রমিকরা আজকে বঞ্চিত হচ্ছে। শ্রমিকরা অধিকার হারা হচ্ছে। শ্রমিকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে মালিকদের দালাল শ্রমিক নেতারা। এসব দালালদের চিহ্নিত করতে হবে। আজকে শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে কাজ করে। কিন্তু তাদের মানবিক মর্যাদা নেই। তাদের বেতন-ভাতা ঠিকমত দেওয়া হচ্ছে না।
এ এম ফয়েজ হোসেন বলেন, শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে। এটি আমাদের প্রধান দাবি। দালালদের দিয়ে শ্রম আইন করা যাবে না। শ্রম আইন করতে শ্রমিক সংগঠন ও শ্রমিকদের দিয়ে। আজকে গার্মেন্টস ও ঔষধ শিল্প নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমাদেরকে সকল ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি নজর রাখতে হবে। তাদের কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেওয়া যাবে না।
বাহারাইনে সুলতান বাহার বলেন, শ্রমিকরা কাজ করে জীবন বাঁচানোর জন্য। শ্রমিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের জন্য কাজ না করে আজ বিষফোড়া হয়ে গেছে। আজকে শ্রমিকদের প্রতারিত করা হচ্ছে। এ ধারা বন্ধ করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সভায় নিম্নোক্ত দাবি সরকারের কাছে পেশ করা হয়েছে :
১.পোশাক ও ঔষধ শিল্পে নৈরাজ্য যারা উস্কে দিচ্ছেন তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
২.সকল শিল্পে মালিক নিয়ন্ত্রিত ট্রেড ইউনিয়ন ও পিসি কমিটি ভেঙে দিতে হবে এবং শ্রমিকদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
৩.শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে শ্রমিক নেতৃবৃন্দের পরামর্শের আলোকে ও অন্য কারো মতামত প্রাধান্য দেওয়া যাবে না।
৪.দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। গার্মেন্টস শিল্পের ৪০ লক্ষ শ্রমিকের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা করতে হবে।
৫.শিল্প এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং শ্রমঘন এলাকায় বিনামূল্যে শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :