একই দিনে রংপুরে গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় পার্টির কর্মসূচিকে ঘিরে নগরজুড়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। আগামী শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে জিলা স্কুল মাঠে গণঅধিকার পরিষদের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে একই দিন বিকেলে জাতীয় পার্টি সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মী সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
জানা যায়, গত রোববার (৩ নভেম্বর) গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও কটূক্তিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার জন্য জাতীয় পার্টির নেতাদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য মো. হানিফ খান সজীব। সেই সঙ্গে ক্ষমা প্রার্থনাসহ বক্তব্য প্রত্যাহার করে না নিলে রংপুরসহ সারা দেশে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে গণবিপ্লব এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।
অপরদিকে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাসহ গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সারা দেশে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত শনিবার (২ নভেম্বর) রংপুরে লাঠি মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে করে জাতীয় পার্টি।
এদিন বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ভিপি নুরের গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে গোটা দেশে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। আমরা ইসরায়েলের টাকায় চলা গণঅধিকার পরিষদকে হিসাব করি না। কিন্তু জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
সাবেক সিটি মেয়র মোস্তফা আরও বলেন, একটি গোষ্ঠী ভিপি নুর, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুলাহকে ব্যবহার করে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। আমি ভিপি নুরসহ অন্যদের হুঁশিয়ারি দিতে চাই রাজপথে দেখা হবে, রাজপথে স্লোগান হবে, রাজপথে রক্ত যাবে, রাজপথে মিছিল হবে, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখতে আমরা প্রস্তুত আছি ও থাকব।
এর আগেও দুদিন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। এ সময় দলের নেতাকর্মীরা সকল ষড়যন্ত্রকে রাজপথে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। এর ধারাবাহিকতায় জাতীয় পার্টি লাঠি মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ করে মাঠ দখলে রাখার চেষ্টা করছেন।
এদিকে শুক্রবারের কর্মসূচি সফল করতে মাঠে প্রচার-প্রচারণায় নেমেছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। নগরজুড়ে মাইকিংয়ের পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পার্টির নেতারা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির জানান, শুক্রবার জাতীয় পার্টি রংপুর মহানগর ও জেলার যৌথ কর্মীসভা পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিকেল ৩টায় শুরু করবে। এতে পার্টির রংপুর মহানগর ও জেলা নেতারা ছাড়াও মহানগরের ৩৩টি ওয়ার্ড এবং আট উপজেলা কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি পার্টির মহানগর ও জেলার সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক রসিক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফা বলেন, শুক্রবার আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে যৌথ কর্মীসভা করব। এরপর অবস্থান কর্মসূচি পালন করব।
এদিকে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজীব গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করব। আমাদের প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে, পোস্টারিং হয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :