"আমার মুক্তি যদি দাও
বাঁধন খুলে
আমি তোমার বাঁধন নেব তুলে ||
যে পথে ধাই নিরবধি
সে পথ আমার ঘোচে যদি
যাব তোমার মাঝে পথের ভুলে ||
যদি নেভাও ঘরের আলো
তোমার কালো আঁধার বাসব ভালো |
তীর যদি আর না যায় দেখা
তোমার আমি হব একা
দিশাহারা সেই অকূলে ||"
........গুরুর গান আমাকে যেমন টানে যতটা শুনেছি জীবনে ততটা ভালোবাসা বুঝিনি , ভালোবাসার ভাষা আমি ততটা আয়ত্ব করিনি । ব্যক্ত হতে চাই , কিন্তু পারি না , না পেরে চিরকাল কেমন শামুকের মত গুটি হয়ে পড়ে থাকি । এমন করে বলার পেছনে অনুচ্চার্য অভিমান কিছু আমার আছে ।
বাস্পকূল দৃষ্টি থেকে প্রেম পড়ে নিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি প্রকৃতির কাছে । কেবলি উড়ুক্ক পথের পথিক মন আমার দিকচিহ্নহীন মূঢ়তার বিচ্ছিন্ন পথের ব্যপ্তি নিয়ে চলি । একটা বাঁশের খুঁটিতে আদরে বেঁধে দেয়া গৃহস্থের গৃহিস্থিতি স্থিতিস্থাপকতার ভেতরে চিলের মত চক্কর কেটে গৃহ পথ যুগপৎ রচনা করে চলছি ।
কত কিছুই ইচ্ছে হয় , ইচ্ছে হয় কেউ বলুক ....ভাঙ্গো , ভেঙ্গে ফেল ভেঙ্গে যা ইচ্ছা তোমার খুশি করো , কাটো, ছিন্নভীন্ন করো, আগুনে পোড়াও ফেলে দাও , তুড়ি ও তাচ্ছিল্যের শব্দে অবহেলাকীর্ণ অভিমান কে তুচ্ছ করতে ।
আমারো হাতে নাতে আলসেমি করতে ইচ্ছা করে ,অলস অলস জেগে উঠা বিছানার আড়মোড়া যেন না ভাঙ্গে , সংসার ও সমাজের নিয়মতান্ত্রিক নির্মাণ গুলোকে জুতোর ফিতের মতো আলগা করে বেঁধে যেমন করে পা গোলিয়ে দেই ঠিক তেমন করে অনিয়ম করতে ইচ্ছে করে ।
সংসারের কিছু মানুষের প্রতি আমার অনেক অভিমান ...যারা বিভোর খেলছে , যাদের একচক্ষু কানা নড়বড়ে ভাঙ্গা চোখ পেতে রাখে দাবা ও পাশায় । যারা মনুষত্ব শব্দটা নিয়ে আইকন বাইকন খেলে , ধূর্ত নিষ্ঠায় যারা প্রেম প্রেম খেলে । এও জানি মানুষ খেলবে , কারণ তা মানুষেরি খেলা , মন নিয়ে , দেহ নিয়ে , টাকা নিয়ে , আবেগ নিয়ে , নিষ্ঠা নিয়ে । কেউ না কেউ জেতেন বটে , তিনি মোটেও অন্ধ কিংবা কানা নন , তিনিও খেলেন খেলার সঙ্গে খেলাকে ভাঙ্গাই তার খেলা ।
কিন্তু আমি কেন খেলা ভাঙ্গতে চাই ! কেন চাই সমগ্রতা? যদি ভেঙ্গে যেতে চায় ভেঙ্গে যাক যা কিছু ভঙ্গুর , আমি তো জোড়াতালি নই , জোড়া আমি দেব না জীবনে । আমি বৃক্ষের মত জুড়ে রবো , তাতে যদি অকালে অঙ্কুর মরুক মাটির গর্ভে , ঝরে যায় তবে যাক , সব বিরুদ্ধ পবনে ।
আমি পরোয়া করি না ,
আচ্ছা এত এত কথা কেন বলে আর কেন লিখে মানুষ ! বলতে পারবেন ? মনে হয় না এটার সঠিক ব্যাখ্যা আছে কোন? এটা হলো ভালো লাগার ১৪ হাত শাড়ি কোমড়ে পেঁচিয়ে নিজেকে সংযত করা , এমনি করে নিজের সময় কে বাঁধতে পারা । প্রাণের মর্মরিত বর্ণমালা , অভঙ্গুর নি:শ্বাসের স্বর , এই করতে করতেই এক সময় মিলে যায় সংসারের সমস্ত উত্তর ।
এত কিছু কি লিখলাম নিজেই বুঝি না , তবে এটা বুঝতে পারছি আমাকে ফাগুন হাওয়া পেয়েছে , এমন দিনগুলোতে আমার কেমন হুতাস হুতাস লাগে এমন শীত আগমনী বাতাসের দিনে , একটা যারপর নাই আকাশচ্যুত পাখাহীন উড়ে যাবার ক্ষমতা নাই , একটা পাথারের হা হুতাস গ্রাস করা মন । কোন ধ্বনি কোন বাণী প্রাণিত করে না মন । এপ্রিল মেয়ে মাসে মানুষের মন এমন করে উদাস হয় মনে হয় প্রকৃতিরই নিয়ম।
আজ ফাল্গুনী দিন দমকা বাতাসের সাথে একটু একটু শরবতী বৃষ্টির ছটা দিন
আমার ঘুম ভেঙ্গেছে অষ্ট্রেলিয়ার মহাদেশের কোন এক শহরে ,, এপ্রিলের ভোরে ... একটা পর্যটন শহরে আমার মন খারাপ হয়ে আছে অকারণে ।
আমার ভাল্লাগছে না । নির্বিকার এই শহরে ! অতিমারী আতঙ্ক নিয়ে মনে মনে গুছিয়ে নিচ্ছি সংসারের কাজগুলো দায়িত্ব গুলো। এবার উঠবার সময়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ফেসবুক একটা হাজিরা খাতা যেন। এখানে ক্যামেরা বাজিরসৌন্দর্য চেতনা , যেন এক নাশকতার ভিতরে শিল্পের প্রতিষ্ঠা ।
নদীর স্রোতে ভাসমান হাঙরের চোয়ালে যে টুকু রোদ্দুর তাই আজকাল ফেসবুকের কাছে জীবন নিসর্গ । মানুষের জীবন ,ঘৃনা ক্রোধ ভালোবাসা-জীবন কে ভোগকরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা সব মিলে এক হয়ে , ছড়িয়ে পডা়র যে বিচিত্র রূপ , সেই রূপের কথক এখানে সবাই । মানুষের জীবনশৈলী আর রুচিবোধ সব কিছুই আমরা বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে বিচার করি
আপনার মতামত লিখুন :