মশা-মাছি প্রায় সারাদিন আমাদের আশপাশে উড়ে বেড়ায়। মশা-মাছি কামড়ালে অথবা খাবারে বসলে অনেক রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। অনেক সময় খাবারের পাত্রে বা পানির গ্লাসে মশা-মাছি বসে, উড়তে গিয়ে পড়ে সেখানেই মারা যায়।
এসবের কারণে ছড়িয়ে পড়া রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকতে খাবার ও পান-পাত্র ঢেকে রাখা উচিত। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবারের পাত্র ঢেকে রাখতে বলেছেন।
বর্ণিত হয়েছে, ‘(রাত্রে ঘুমাবার আগে) তোমরা পাত্র ঢেকে দাও, পানির মশকের মুখ বেঁধে দাও, দরজাগুলো বন্ধ ক’রে দাও, প্রদীপ নিভিয়ে দাও। কারণ, শয়তান মুখ বাঁধা মশক খুলে না, বন্ধ দরজাও খুলে না এবং পাত্রের ঢাকনাও উম্মুক্ত করে না। তাই তোমাদের কেউ যদি পাত্রের মুখে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে আড় করে রাখার জন্য শুধু একটি কাঠের টুকরা ছাড়া অন্য কিছু না পায়, তাহলে সে যেন তাই করে। কারণ ইঁদুর ঘরের লোকজনসহ ঘর পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।’ ( মুসলিম)
তবে মশা-মাছি পানিতে বা খাবারে পড়লে এর কারণে তা নাপাক বা অপবিত্র হয়ে যায় না। কারণ, মশা-মাছির ভেতরে এমন কোনও অপবিত্র বস্তু নেই, যার কারণে তা খাবার বা অন্য বস্তুকে অপবিত্র করে দিতে পারে। একারণে খাবারে বা পানিতে মশা, মাছি পড়লে তা উঠিয়ে ফেলে বা ছেঁকে ফেলে খাওয়া জায়েয হবে।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِذَا وَقَعَ الذُّبَابُ في إِنَاءِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْمِسْهُ كُلَّهُ، ثُمَّ لِيَطْرَحْهُ، فإنَّ في أَحَدِ جَنَاحَيْهِ شِفَاءً، وفي الآخَرِ دَاءً
যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে সম্পূর্ণভাবে ডুবিয়ে দিবে, তারপর ফেলে দিবে। কারণ,তার এক ডানায় থাকে রোগ মুক্তি, আর অন্য ডানায় থাকে রোগ জীবাণু। (সহিহ বুখারী ৫৭৮২)
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘আবু জাফর এবং আতা (রাহ.) মশা ও বুরগুসের (পাখাবিহীন এক প্রকার ক্ষুদ্র কীট) রক্তে কোনো সমস্যা মনে করতেন না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ২০৩১)
ফেকাহবিদ আলেমরা বলেন, মশা-মাছি, ছারপোকার রক্ত অপবিত্র নয়। তা কাপড়ে লাগলে বা খাবার, পানিতে পড়লে কোনো সমস্যা নেই। এতে খাবার বা কাপড় নাপাক হবে না। (আলবাহরুর রায়েক ১/১০১; ফাতহুল কাদীর ১/১৩১)
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :