আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সিজদার নির্দেশ অস্বীকারের মধ্য দিয়ে মানুষের সঙ্গে শয়তানের শত্রুতা শুরু হয়েছে। এখনো সে শত্রুতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এ জন্য হাদিসে শয়তানের ধোঁকা থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা কেউ তোমাদের মুসলিম ভাইয়ের প্রতি কখনো অস্ত্র দ্বারা ইশারা করবে না। কারণ সে জানে না যে, ওই অস্ত্র দ্বারা শয়তান তাকে আঘাত করতে প্ররোচিত করছে এবং এর ফলে সে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। -(মুসনাদে আহমদ, ২/৩১৭)
পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই, যাকে শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় না। শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রথম করণীয় হলো গোনাহমুক্ত জীবনযাপন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর শয়তান যদি তোমাকে খোঁচা (কুমন্ত্রণা) দেয় তাহলে তুমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও। নিঃসন্দেহে তিনি স্বয়ং সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। -(সুরা হামিম সাজদা, আয়াত, ৩৬)
শয়তান ইমানদারের পেছনে পড়ে থাকে। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারও কাছে শয়তান আসতে পারে এবং সে বলতে পারে এ বস্তুকে কে সৃষ্টি করেছে? ওই বস্তুকে কে সৃষ্টি করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে তোমাদের প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন ব্যাপারটি এই স্তরে পৌঁছে যাবে, তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং বিরত হয়ে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস, ৩২৭৬)
ইমান বিষয়ক শয়তানের কুমন্ত্রণা দূর করার সহজ উপায় তিনটি। এক. আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম পড়ে নেওয়া। দুই. আমানতু বিল্লাহ (ইমান বিষয়ক কালেমা) পড়ে নেওয়া। তিন. এ জাতীয় চিন্তা থেকে বিরত হয়ে অন্য কোনো চিন্তা বা কাজে লিপ্ত হওয়া।
হাদিসে শয়তানকে দুর্বল করার আমল শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। হজরত আবু মালিহ একজন (সাহাবি) থেকে বর্ণনা করেন, আমি নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে একই উটের পিঠে সওয়ার ছিলাম। এমন সময় উটটি লাফালাফি করতে থাকলে আমি বলি, শয়তানের সর্বনাশ হোক! তখন নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি এরূপ বলো না যে, শয়তানের সর্বনাশ হোক! কারণ, তুমি যখন এরূপ বলবে, তখন শয়তান অহংকারে ঘরের মতো ফুলে যায়। আর বলে, আমি খুবই শক্তিমান। বরং তুমি বিসমিল্লাহ বলো। যখন তুমি এরকম বলবে, তখন শয়তান ছোট মাছির মতো (দুর্বল) হয়ে যায়। -(সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ৪৯৮২)
শয়তানের সমস্ত ওয়াসওয়াসা প্রতিকারের বড় উপায় নিয়মিত নামাজ পড়া ও অন্যান্য আমল করা। আমলের মাধ্যমে ইমানদার বিজয় লাভ করে আর অভিশপ্ত শয়তান হেরে যায়।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :