- ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া শতাধিক জাল নোট তৈরি ও ছড়িয়ে দেয়া চক্র
- সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাবেচা হয় জাল টাকা
- রাজধানীতে অর্ধশতাধিক জাল টাকার ডিলার সক্রিয়
- জালনোট তৈরির সিন্ডিকেটে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদক কারবারি, দালাল, চোরাকারবারি
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শতাধিক জাল নোট তৈরি ও ছড়িয়ে দেয়া চক্র। কোরবানির পশুর হাট, ব্যাংক, কুরিয়ার সার্ভিস, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তারা ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালনোট তৈরির অর্ধশতাধিক চক্র। এসব জাল নোট বাজারে ছড়িয়ে দিতে তৎপর রয়েছে আরও প্রায় শতাধিক চক্র। ঈদের বাজারে কোটি টাকার জালনোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
একই ব্যক্তি একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়ার পরও জামিনে বের হয়ে আবারও জাল টাকার কারবারে তৎপরতা চালাচ্ছে এমন নজিরও আছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডাইস, কাটার, কোটি কোটি টাকার সমপরিমাণ জালনোট প্রস্তুতের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কাগজ, কালি, জলছাপ দেয়ার জব্দ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে জাল টাকা কেনাবেচার নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন তারা। এসব পেজ প্রমোট, বুস্টিং করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করেন । যারা ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর টার্গেট করে জাল নোটের ব্যবসায় লিপ্ত হন।
তারা প্রতি এক লাখ টাকা মূল্যমানের জালনোট ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। ঈদ উপলক্ষে জাল নোটের চাহিদা বেড়ে যায় বর্তমানে এক লাখ টাকার জালনোট ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায়ই অর্ধশতাধিক জাল টাকার ডিলার সক্রিয় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সময়ের অভিযানে রাজধানীর কদমতলী, ডেমরার বিভিন্ন মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকার কারখানার সন্ধান মেলে। এ ছাড়া লালবাগ, রামপুরা, মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় জাল নোটের কারখানায় অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে অর্ধশতাধিক গ্রুপ। এর বাইরে আছে আরও অর্ধশতাধিক জাল টাকার ডিলার। প্রত্যেক ডিলারের সঙ্গে কমপক্ষে পাঁচ-ছয়জন বাজারজাতকারী আছেন।
ডিবি পুলিশ বলছে, ঈদুল আজহাকে টার্গেট করে চক্রটি বিপুল পরিমাণ জাল নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঢাকায় তৈরি এই জাল নোট বিক্রির জন্য যোগাযোগ হতো অনলাইনে আর লেনদেন হতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। লেনদেনের পর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হয় জাল নোট। যার বেশিরভাগ এবার যাচ্ছে মফস্বলে। টার্গেট কোরবানির পশুর হাট।
রাজধানীর কদমতলীর দনিয়া এলাকায় জাল মুদ্রা তৈরির কারখানার সন্ধান মিলেছে। সেখান থেকে জাল নোট প্রস্তুতকারী চক্রের মূল হোতা, ক্রেতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সম্প্রতি ডিবি লালবাগ বিভাগ অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশি দেড় কোটি জাল নোট এবং ভারতীয় জাল রুপি ও জাল নোট তৈরির সরঞ্জামাদি জব্দ করে।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান জানান, কোরবানির ঈদ ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জাল টাকা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। ঈদ ঘিরে এরইমধ্যে প্রায় দুই কোটির টাকার জাল নোট মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়ার প্রস্তুতি চলছিল। কিছু টাকা পাইকারি পর্যায়ে বিক্রিও করেছে চক্রের হোতা লেয়াকূত হোসেন জাকির। এ কাজে তার অভিজ্ঞতা ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের। গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত আটবার। প্রতিবার বের হয়ে একই পেশায় যুক্ত হন তিনি।
গ্রেফতার জাকির জানান,
আগে ৫০০ ও ১০০০ নোটের চাহিদা বেশি থাকলেও এখন ছোট নোটের চাহিদা বেশি। এ জন্য ২০০ টাকার নোটও জাল করছেন তারা। এক লাখের ১০০০ টাকার বান্ডিল সর্বোচ্চ আট হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। বেশ কিছুদিন ধরে ছাপানো শুরু করেছেন ভারতীয় রুপিও।
জাকিরের সহযোগী রুমানা ইসলাম জানান, এর আগে একাধিকবার জেল খেটেছেন মাদক মামলায়। জেলে থাকাবস্থায় জাল নোট তৈরি ও সরবরাহকারী চক্রের সঙ্গে পরিচয়ের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্ত হন জাল নোটের কারবারের সঙ্গে। মাত্র ১৫ দিন আগেও জাকিরের থেকে ৫০ লাখ টাকার জাল নোট সংগ্রহ করে বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
ডিসি মশিউর রহমান জানান,
জাকিরের অধীন অন্তত ১৫ জন পুরুষ ও মহিলা জাল নোট ছড়িয়ে দেয়ার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। যাদের প্রতি মাসে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা বেতন দেন জাকির। এ ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালনোট তৈরির অর্ধশতাধিক চক্র। এসব জাল নোট বাজারে ছড়িয়ে দিতে তৎপর রয়েছে আরও প্রায় মতাধিক চক্র। ঈদের বাজারে কোটি টাকার জালনোট বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে নজরদারি ও অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
একই ব্যক্তি একাধিকবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে বের হয়ে আবারও জাল টাকার কারবারে তৎপরতা চালাচ্ছে এমন নজিরও আছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে জালনোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ডাইস, কাটার, কোটি কোটি টাকার সমপরিমাণ জালনোট প্রস্তুতের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল কাগজ, কালি, জলছাপ দেয়ার জব্দ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে জাল টাকা কেনাবেচার নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন তারা। এসব পেজ প্রমোট, বুস্টিং করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করেন । যারা ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর টার্গেট করে জাল নোটের ব্যবসায় লিপ্ত হন।
তারা প্রতি এক লাখ টাকা মূল্যমানের জালনোট ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করতেন। ঈদ উপলক্ষে জাল নোটের চাহিদা বেড়ে যায় বর্তমানে এক লাখ টাকার জালনোট ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকায়ই অর্ধশতাধিক জাল টাকার ডিলার সক্রিয় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সময়ের অভিযানে রাজধানীর কদমতলী, ডেমরার বিভিন্ন মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল টাকার কারখানার সন্ধান মেলে। এ ছাড়া লালবাগ, রামপুরা, মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জ এবং নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় জাল নোটের কারখানায় অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়ন্ত্রণ করছে অর্ধশতাধিক গ্রুপ। এর বাইরে আছে আরও অর্ধশতাধিক জাল টাকার ডিলার। প্রত্যেক ডিলারের সঙ্গে কমপক্ষে পাঁচ-ছয়জন বাজারজাতকারী আছেন।
ডিএমপির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
বেশিরভাগ জাল নোটের কারবারি ঢাকা শহরে বাসা কিংবা অফিস ভাড়া নিয়ে জালনোট তৈরি করে। বাসা ভাড়া দেওয়ার আগে মালিকের উচিত প্রত্যেকের এনআইডি কার্ডের কপি সংগ্রহ করে নিকটস্থ থানায় জমা দেওয়া। এ ছাড়া বাসা ভাড়া নেওয়ার পর ভাড়াটিয়া কী কাজ করছে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। সন্দেহজনক কিছু হলেই পুলিশকে খবর দিতে হবে।
র্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, জালনোট তৈরির চক্রগুলো বছরজুড়ে সক্রিয় থাকলেও ঈদ, পূজা পার্বণের সময়ে হাট বাজার ঘিরে বাড়তি তৎপরতা চালিয়ে থাকে। বরাবরের এই অপতৎপরতা থেমে থাকেনি এবারও। র্যাব ও পুলিশের নজরদারিতে সম্প্রতি র্যাব-পুলিশের হাতে জালনোট চক্রের বেশ কিছু সদস্য গ্রেপ্তারের পর তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাসা ভাড়া নিয়ে গোপনে জালনোট তৈরির সিন্ডিকেটে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ইয়াবাসহ মাদক কারবারি, হাসপাতালের দালাল, চোরাকারবারি, গার্মেন্ট ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।
সারা বছর মাদকের লেনদেন, চোরাই পণ্যের কারবার, সোনা বেচাকেনাসহ বিভিন্ন অবৈধ লেনদেনে জালনোট চালিয়ে দেয় ওই চক্রগুলো। বিগত কয়েক বছর ধরে জালনোটের কারবারে জড়িত তৌফিক একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। এই চক্রের আরও দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। ওরা ১ লাখ টাকার জালনোট ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এর মধ্যে শতাধিক চালানে ওরা কয়েক কোটি টাকার জালনোট বাজারে ছেড়ে দিয়েছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলছেন,
জালনোট ছাপা ও বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চক্রগুলোর প্রায় অর্ধশত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা বারবার জামিনে বেরিয়ে যায়। আবার একই কারবারে জড়িয়ে পড়ে। বাড্ডা থানাধীন নুরেরচালা সাঈদনগরে একটি সাততলা বাড়ির ষষ্ঠতলায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ লাখ টাকার জালনোট ও নোট তৈরির সরঞ্জামসহ আবদুর রহিম শেখ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী এই জাল নোটের কারখানা তৈরি করেন। ফাতেমা হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জালনোট তৈরির সময় সহযোগীসহ ধরা পড়লেও তাঁর স্বামী রহিম পালিয়ে যান। জামিনে ছাড়া পেয়ে এই নারী আবারও স্বামীর সঙ্গে মিলে জালনোট তৈরি করে তা বাজারে ছাড়তে শুরু করেছিলেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, মিরপুরের পল্লবী ও ভাটারা এলাকায় র্যাবের অভিযানে আটক হওয়া জালনোট চক্রের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আসামিরা খুব নিখুঁতভাবে জালনোট তৈরি করে আসছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে লিপ্ত। চক্রের সদস্যরা ১০০ টাকার নোট পানিতে সিদ্ধ করে টাকার রং তুলে ফেলত। এরপর শুকিয়ে গেলে ওই টাকার কাগজের ওপর ৫০০ টাকার ছাপ দিত। এতে টাকার গোপন নকশা, জলছাপ ও নিরাপত্তার সুতা অক্ষু্ণ্ণ থাকত। এই চক্রটির হোতা সেলিম মিয়া বিপুল পরিমাণ ভারতীয় রুপী ও জালনোটসহ র্যাবের হাতে আটক হয়েছিল। জামিনে বের হয়ে তিনি একই কাজে পুনরায় লিপ্ত হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ,
যারা জাল টাকা তৈরি করে তাদের ইতোমধ্যে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। যারা ঈদকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি করার পরিকল্পনা করছে তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও যারা জালনোটের কারবার করে এরই মধ্যে বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের ওপর বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। র্যাবের সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক অনলাইনে নজরদারি করছে।
‘কোরবানি ঈদ আসলেই জাল নোট চক্রকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে’। তাই জাল নোট ঠেকাতে,খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক পিএলসি`র উদ্যোগে জাল নোট প্রচলন প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে একটি চক্র জাল টাকার নোটের লেনদেনের চেষ্টা চালায়। কোরবানি ঈদ আসলেই জাল নোট চক্রকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। জাল নোট না চেনার কারণে অনেকেই বিপদে পড়েন। পথে বসতে হয়। আমাদেরকে জাল নোট কিভাবে শনাক্ত করতে হবে? সেটা অবশ্যই জানতে হবে। আমাদেরকে আরও বেশি সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।’
সম্প্রতি নাটোরে বাজারে জালনোট ছড়ানোর অভিযোগে জালটাকাসহ স্বামী-স্ত্রী র্যাবের হাতে গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার রনশি বারী এলাকার রিপন আলী ও তার স্ত্রী লাবনী আক্তার রিমু। ২২ মে র্যাব-৫ এর সদস্য্যরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সদর উপজেলার ধরাইল বাজারে অভিযান চালায় । এসময় এক হাজার টাকার ১২ টি ও পাঁচশত টাকার ২৪টি জাল নোটসহ রিপন আলী ও লাবনী আক্তার রিমুকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা জাল নোট সংগ্রহ করে বিভিন্ন এলাকার এজেন্টদের কাছে সরবরাহ করে বলে ব্যাবের সংম্লিষ্ট সূত্র জানায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় মামলা দায়েরের পরে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ইউটিউব দেখে নিজ ঘরেই জালনোট বানাতেন হৃদয়। ইউটিউব দেখে নিজ ঘরেই জালনোট বানানো শুরু করে হৃদয় মাতব্বর (২২) নামের এক যুবক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জালনোট বেচতো বলে জানা গেছে। এবার ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বিপুল পরিমাণ জালনোট বাজারে ছড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো এই যুবক। অবশেষে র্যাবের জালে আটকা পড়েছে সে। পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’কে কেন্দ্র করে এরূপ বেশকিছু জাল নোট প্রস্তুতকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে র্যাব গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে। ৬ জুন রাতে রাজধানীর শ্যামপুর থানাধীন পশ্চিম ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত হৃদয় শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার মোতালেব মাতব্বরের ছেলে। বর্তমানে তিনি শ্যামপুর থানাধীন পশ্চিম ধোলাইপাড়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।
র্যাব আরও জানায়, হৃদয়কে আটকের সময় তার কাছ থেকে জালনোট তৈরিতে ব্যবহৃত একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, একটি প্রিন্টার, একটি কী-বোর্ড, একটি মাউস, একটি রাউটার, দুটি মাল্টিপ্লাগ, একটি পেপার কাটার, ৯টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, তিনটি ভুয়া ভারতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং ৬০ হাজার ৭০০ টাকা মূল্যমানের ৬০২টি ১০০ টাকার ও একটি ৫০০ টাকার জালনোট পাওয়া উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আগে থেকেই কম্পিউটারে পারদর্শী ছিলো সে। ধোলাইপাড় এলাকার একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করতো সে। ইউটিউব দেখে জালনোট তৈরিতে পারদর্শিতা অর্জন করে হৃদয়। পরবর্তীতে কম্পিউটার, প্রিন্টার, পেপার কাটার এবং জালটাকা তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিজ ঘরে জাল নোট ছাপানোর কাজ শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,
হৃদয় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিজ্ঞপান দিয়ে জালটাকা পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সংগ্রহ করে। এবারের ঈদুল আজহা ঘিরে বিপুল পরিমাণ জালনোট বাজারে সরবরাহ করার প্রস্তুতি নিয়েছিলো সে। এছাড়াও হৃদয় দেশি -বিদেশি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে বিক্রী করতো সে ।
গাজীপুর মহানগরীর গাছা এলাকা থেকে জাল টাকা সহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকার মূল্যমানের জাল নোট জব্দ করা হয়েছে । ১৯ মে রাতে গাজীপুর মহানগরীর উত্তর খাইলকুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলো -ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন থানার পক্ষিয়া গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে শিবলু (৩৯) ও কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার ছয়গ্রাম এলাকার মমিন মিয়ার ছেলে রাকিবুল হাসান (২৭)। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় শিবলুর স্ত্রী মিনারা ও তাদের অপর এক সহযোগী আনিসকে আসামি করে মোট চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
জাল নোট যাচ্ছে মফস্বলের গরুর হাটেও, মাধ্যম কুরিয়ার সার্ভিস।কোরবানির ঈদকে ঘিরে অন্যান্য বছরের মতো সক্রিয় জাল টাকার কারবারিরা। সুযোগ কাজে লাগাতে রাজধানীর কদমতলীতে তৈরি করা হচ্ছিল জাল টাকা। সুনির্দিষ্ট তথ্য ও গোয়েন্দা নজরদারির ভিত্তিতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি জাল নোট তৈরি চক্রের প্রধান জাকিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা।
একুশে সংবাদ/হ.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :