ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর মহম্মদ আসিফ ও সলমন বাটের সঙ্গে যখন মহম্মদ আমির জেলে গিয়েছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে একটি ভালো ঘটনাও ঘটেছিল। প্রকৃতপক্ষে, তিনি যখন জেলে ছিলেন, তার মামলা ছিল পাকিস্তান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নারজিস খানের হাতে। এ সময় দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, যা অচিরেই প্রেমে রূপ নেয়। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ২০১৬ সালে দুজনেই বিয়ে করেন। এই দম্পতির মিনসা আমির এবং জোয়া আমির নামে দুটি কন্যা রয়েছে।
ব্রিটিশ নাগরিক ও আইনজীবী নারজিস খানের সঙ্গে বিয়ের কারণে ব্রিটিশ পাসপোর্ট পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার মহম্মদ আমির। ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত হওয়া আমিরের জন্য তাঁর আসন্ন পাসপোর্ট সুরক্ষিত করার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সম্ভাব্যভাবে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করার দরজা খুলে দেবে। তাহলে কি তিনি আইপিএল খেলতে নামবেন? এ বিষয়ে এবার বিবৃতি দিয়েছেন মহম্মদ আমির।
এআরওয়াই নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে, আমির তাঁর আসন্ন ব্রিটিশ পাসপোর্টের অধীনে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) অংশ নেওয়ার কৌতূহলী সম্ভাবনা সহ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ভবিষ্যত সম্ভাবনার কথা খুলে বলেছিলেন। আইপিএলে খেলার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন যে তাঁকে একবারে এক ধাপ এগোতে হবে। এখন তাঁকে প্রথমে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিতে হবে, তবেই তিনি আইপিএল ২০২৪ নিয়ে ভাববেন।
মহম্মদ আমির বলেন, ‘প্রথমত, আমি ইংল্যান্ডের হয়ে খেলব না। আমি পাকিস্তানের হয়ে খেলেছি। দ্বিতীয় (আইপিএল সম্পর্কে) এখনও আরও এক বছর বাকি আছে। সে সময় পরিস্থিতি কী হবে সেটা দেখতে হবে? আমিও দেখব। আমি সবসময় বলি, আমি ধাপে ধাপে এগোতে চাই। আমি জানি না আগামীকাল কী হবে এবং আমি কি করে ২০২৪ সালের আইপিএল খেলার কথা ভাবতে শুরু করব।’
এর পরে বাঁহাতি পেসার আরও বলেছেন, ‘যখন আমি আমার পাসপোর্ট পাব, তখন দেখব আমার কাছে সেরা সুযোগ কোনটা এবং যা যা সামনে পাব, আমি সেগুলোকে কাজে লাগাবার চেষ্টা করব।’ পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের এই মুহূর্তে আইপিএলের জন্য নিবন্ধন করার অনুমতি নেই, তবে তারা ব্রিটিশ নাগরিক হয়ে গেলে তাদের জন্য আইপিএলের দরজা খুলে যেতে পারে। তবে সেটা নির্ভর করবে বিসিসিআই কী সিদ্ধান্ত নেয় তার উপর।
তথ্যের জন্য, আমরা আপনাকে বলি যে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরে, মহম্মদ আমির, সলমন বাট এবং মহম্মদ আসিফ পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে আসেন, তবে শুধুমাত্র মহম্মদ আমিরই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেন। এমন অবস্থায়, আইপিএলে মহম্মদ আমিরের প্রবেশ নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে, এর সঙ্গে জল্পনা রয়েছে যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাঁকে ২০ কোটি পর্যন্ত মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে তাদের দলে যোগ করাতে পারে।
পাকিস্তান দলের অন্যতম খেলোয়াড় প্রাক্তন বাঁহাতি ফাস্ট বোলার মহম্মদ আমির যার নাম ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গেও জড়িত হয়েছে। ২০১০ সালের অগস্টে, `নিউজ অফ ওয়ার্ল্ড`-এর রিপোর্টার একটি স্টিং অপারেশন পরিচালনা করেন। যেখানে লর্ডস ক্রিকেট টেস্টে বুকি মাজহার মাজিদের সঙ্গে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিলেন পাকিস্তানের তিন খেলোয়াড় মহম্মদ আমির, মহম্মদ আসিফ এবং সলমন বাট। এই কারণে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড মহম্মদ আমিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল।
পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞায় মহম্মদ আমিরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার প্রায় শেষ হয়ে যায়। মাঠে ফেরার পর তাঁকে দলে বিশেষ কোনও সুযোগ দেওয়া হয়নি। ২০১৯ সালে, মহম্মদ আমিরকে শেষবার ওডিআই এবং টেস্ট ম্যাচ খেলতে দেখা গিয়েছিল। তিনি ২০২০ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর বিদায়ী টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন। ৩৬টি টেস্ট ম্যাচে তিনি মোট ১১৯টি উইকেট নিয়েছেন। তিনি ৬১টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে তাঁর দখলে রয়েছে ৮১টি উইকেট। একই সঙ্গে ৫০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫৯ উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন মহম্মদ আমির।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :