আন্তর্জাতিক অভিষেকের এক সপ্তাহও পেরোয়নি, তানজিম হাসান সাকিব এরই মাঝে পড়ে গেছেন তীব্র সমালোচনার মুখে; তাও আবার মাঠের বাইরের কাজ দিয়ে। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপে ম্যাচ জিতিয়ে রাতারাতি নায়ক হয়ে গিয়েছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। কিন্তু সেই ম্যাচের একদিন পরেই যুব বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে।
মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা তানজিম সাকিবের কিছু পোস্ট নিয়ে সমালোচনার সূত্রপাত। তরুণ উদীয়মান তারকার সেসব পোস্ট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত সমর্থকরা। অনেকেই তরুণ এই ক্রিকেটারের সমালোচনা করলেও অনেকে সমর্থন দিচ্ছেন তাকে।
মাঠে দুর্দান্ত পারফর্ম করা তানজিম সাকিব পুরানো ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন। গণমাধ্যমকে তানজিম সাকিব বলেছেন, ‘আল্লাহ তো কুরআনে বলেই দিয়েছেন আমি জিন এবং মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি আমার এবাদতের জন্য। ক্রিকেট আমার পেশা, আমি এখান থেকে ইনকাম করি।
আমার তো মেইন জীবনটা অফলাইনের জীবন। মৃত্যুকে সকলেরই মোকাবিলা করা লাগবে। কখন কে মারা যাবে, কেউ কিছু জানে না। আমি পরকালে সফল হতে না পারলে তো শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই থেকে যাব। সুতরাং সেই হিসেব করে আমি ইসলামকে মেনে চলার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি সবসময় ইসলামের মধ্যে থাকার জন্য। আর এই জিনিসটি আমাকে খেলার মধ্যেও অনেক সাহায্য করে।’
বাংলাদেশের তরুণ এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘ইসলাম আমাকে শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে সাহায্য করে। তাতে মানসিকভাবে আমি শক্ত থাকতে পারি। আমার মানসিকতা অন্যদিকে যায় না। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের মানসিকতা ধরে রাখতে পারি। সুতরাং এটি আমাকে দুনিয়া এবং আখিরাত- দুইদিক থেকেই সাহায্য করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সতীর্থরা আমার এই বিষয়টা খুবই পজিটিভলি নেয়। যখন তারা কোনো জিনিস না বুঝে, বা ইসলামী কোনো একটা জিনিস জানার চেষ্টা করে তখন আমাদের দুজনের কাছেই আসে। সেই বিষয়গুলো আমাদের জানা না থাকলে আমরা জেনে তাদের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।’
মাঠে দুর্দান্ত পারফর্ম করা তানজিম সাকিবের পুরানো ফেসবুক পোস্ট ইস্যু ইতোমধ্যেই নজরে এসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আমরা ওর সঙ্গে কথা বলছি। কথা বলে নিই, তারপর জানাব। ওর একটা ভুল হয়েছে, আমরা সেই বিষয়টা ওর কাছ থেকেই জানতে চাচ্ছি।’
২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তানজিম তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে লিখেছিলেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়।’
পোস্টের শেষে বলা হয়েছে, ‘অতএব মা-বোনেরা নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে স্বামীর আনুগত্য ও বাসায় অবস্থান করে রানির হালাতে অবস্থান করুন। অতএব মা-বোনেরা দুনিয়া কামাতে যেয়ে আখেরাত না হারিয়ে ঘরে অবস্থান করে স্বামী-সন্তানের খেদমত করে দুনিয়া ও আখেরাত দুটিই কামাই করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ।’
তানজিমের এই পোস্টের স্ক্রিনশট এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পোস্টটি এখন আর তানজিমের ফেসবুক পেজে পাওয়া যাচ্ছে না।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :