চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাজে সময় পার করা ইংল্যান্ডের সামনে দারুণ সুযোগ ছিল এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকা ভারতকে হারানোর। দুর্দান্ত বোলিং করে রোহিত শর্মার দলকে ২২৯ রানেই আটকে দেয় ইংল্যান্ড। ২৩০ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১২৯ রানেই গুটিয়ে যায় স্টোকস-বাটলাররা। ১০০ রানের বড় পরাজয়ে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতেই রইলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
রোববার (২৯ অক্টোবর) ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একনা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটাররা। তবে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাটে ভর করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান সংগ্রহ করেছে ভারত। ১০১ বলে ৮৭ রান করেন রোহিত।
২৩০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে ইংল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে ৩০ রান যোগ করেন ডেভিড মালান ও জনি বেয়ারস্টো।
এরপর ১৭ বলে ১৬ রান করে মালান আউট হলে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ইংল্যান্ড। ২২ রান যোগ করতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ইংল্যান্ড।
এরপর মইন আলিকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে দলীয় ৮১ রানে ৩১ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফিরে যান মইন।
এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে একেবারে ছিটকে যায় ইংলিশরা। এরপর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারিয়ে ৩৪ ওভার ৫ বলে ১২৯ রানে অলআউট হয় ইংলিশরা।
এর আগে, ভারতের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করেন ভারতীয় দুই ওপেনার রোহিত শর্মা (অধিনায়ক) ও শুভমান গিল। শুরু থেকে দেখে শুনে খেলতে থাকেন ভারতীয় এ দুই ব্যাটার। এরই মধ্যে দলীয় ৩.৬ ওভারে ভুল করে বসেন গিল। ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরেন তিনি। যাওয়ার আগে তিনি করেন ১৩ বলে ৯ রান। এরপর মাঠে নামেন বিরাট কোহলি। মাঠে নেমে পিচে রানের খাতা খোলার আগে আউট হয়েছেন কোহলিও।
দলীয় ৬.৫ ওভারে ডেভিড উইলির বলে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরেন কোহলি। এসময় তিনি শূন্য রানে আউট হয়েছে। এরপর মাঠে নামা শ্রেয়াস আইয়ারও পিচে বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ১১.৫ ওভারে ক্রিস ওকসের বলে বলে মার্ক উডের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন শ্রেয়াস। যাওয়ার আগে তিনি করেন ৪ রান।
উইকেট পড়তে থাকায়, দেখে-শুনে খেলতে থাকেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাকে সঙ্গ দেন অপর প্রান্তে থাকা লোকেশ রাহুল। এই দুইজন মিলে গড়ের অর্ধশত রানের জুটি। তাকে কিছুটা চাপ কাটিয়ে উঠে ভারত। এরই মধ্যে দেখে-শুনে খেলে ক্যারিয়ারের ৫৪তম অর্ধশতক পূর্ণ করেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এতে তিনি খরচ করেন ৬৬ বল। দলীয় ২৩.৩ ওভারে মার্ক উডের বলে ২ রান নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তার ফিফটিতে চাপ কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করে ভারত।
দলীয় ৩০.২ ওভারে রাহুলকে আউট করেন ডেভিড উইলি। তার বলে জনি বেয়ারস্টোর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন রাহুল। যাওয়ার আগে তিনি করেন ৫৮ বলে ৩৯ রান। তাতে ভেঙে যায় ১১ বলে ৯১ রানের জুটি। এরপর মাঠে নামেন সূর্যকুমার যাদব।
সূর্যকুমারকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় ইনিংস বড় করতে থাকেন অধিনায়ক রোহিত। এরই মধ্যে দলীয় ৩৬.৫ ওভারের ভুল করে বসেন রোহিত।আদিল রশিদের বলে লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন রোহিত। যাওয়ার আগে তিনি করেন ১০১ বলে ৮৭ রান। এরপর মাঠে নামা রবীন্দ্র জাদেজাও বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি।
দলীয় ৪০.৩ ওভারের আদিল রশিদের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হেঁটেছেন রবীন্দ্র জাদেজা। যাওয়ার আগে তিনি ১৩ বলে ৮ রান করেছেন। এরপর মাঠে নামেন মোহাম্মদ শামি। তিনি বেশিক্ষণ পিচে থিতু হতে পারেননি। দলীয় ৪১.১ ওভারের মার্ক উডের বলে জস বাটলার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। ভারতীয় এই বোলার দুই অংকের সংখ্যায় পার করতে পারেননি। এরপর মাঠে নামেন জাসপ্রিত বুমরা।
উইকেট হারাতে দেখে শেষ দিকে একাই দলের হাল ধরেন সূর্যকুমার যাদব। ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক পূর্ণ হওয়ার এক রান আগেই তাকে থামান ডেভিড উইলি। তাতেই সূর্যকুমারের পাওয়া হলো না ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি। দলীয় ৪৬.২ ওভারের ডেভিড উইলির বলে ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ফিরেন সূর্যকুমার। যাওয়ার আগে তিনি খেলেন ৪৭ বলে ৪৯ রানের ইনিংস।
ভারতের হয়ে জাসপ্রিত বুমরা ২৫ বলে ১৬ রান ও কুলদীপ যাদব করেন ১৩ বলে ৯ রান। শেষ দিকে নির্ধারিত ৫০ ওভারের খেলা শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান সংগ্রহ স্বাগতিক ভারত। ফলে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩০ রান। স
ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট নেন ডেভিড উইলি। এতে তিনি খরচ করেন ৪৫ রান। এরপর জোড়া উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ। আর একটি উইকেট নেন মার্ক উড।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :