ক্রীড়া মন্ত্রীর বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত বাতিল এবং শ্রীলংকান ক্রিকেট বোর্ড পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আপীল আদালত। আজ মঙ্গলবার পুর্নাঙ্গ শুনানী শেষে এই আদেশ দিয়েছে আদালত।
ক্রীড়া মন্ত্রী রোশান রানাসিংহের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত এবং অন্তবর্তীকালিন কমিটি গঠনকে চ্যালেঞ্জ করে বোর্ড সভাপতির একটি আপীল আবেদন সোমবার গ্রহন করে আদালত। আদালতের একজন কর্মকর্তা বলেন,‘ দুই সপ্তাহের জন্য বোর্ড পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সময় ফের বিষয়টি নিয়ে শুনানী হবে।’
গত এক মাস যাবত বোর্ডের সঙ্গে লংকান ক্রীড়া মন্ত্রীর মধ্যে সৃস্ট সংকটের এটি ছিল নতুন মোড়। দ্বীপ দেশটির সবচেয়ে ধনী এই বোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ক্রীড়া মন্ত্রী।
ভারতে চলমান বিশ্বকাপে স্বাগতিকদের কাছে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হবার পর ব্যাপক দুর্নীতির জন্য ফের লংকান বোর্ড সদস্যদের অভিযুক্ত করেন রানাসিংহে। মঙ্গলবারের আদালতের সিদ্ধান্ত পাওয়ার সাথে সাথে প্রাক্তন অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্যদের শ্রীলংকা ক্রিকেট অফিস থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে।
তবে এই বিষয়ে তাৎক্ষনিক কোন প্যতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ১৯৯৬ বিশ^কাপ জয়ী লংকান অধিনায়ক রানাতুঙ্গার কাছ থেকে। মাত্র একদিন আগে দায়িত্ব নিয়ে বোর্ডকে জঞ্জালমুক্ত এবং ক্রিকেটকে পুনরুজ্জিবীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার তিনি বলেছিলেন,‘ শ্রীলংকা ক্রিকেট দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমি সেই চিত্রটি পরিবর্তন করতে চাই।’ ক্রিকেট বোর্ডের ‘অসামান্য সমস্যা’ সমাধানের জন্য সরকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরির নেতৃত্বে একটি মন্ত্রিসভা কমিটিও গঠন করেছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কাছ থেকে কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। সরকারী হস্তক্ষেপর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষমতা রয়েছে আইসিসির। এর আগেও শ্রীলংকাকে নিষিদ্ধ করেছিল এই সংস্থাটি।
লংকান বোর্ডের ব্যাপক দুর্নীতি তদন্তের জন্য গতমাসে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের পরও আইসিসির চাপে পড়ে সেটি প্রত্যাহর করেন ক্রীড়া মন্ত্রী। বিষয়টিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমন পরিস্থিতিতে গত শনিবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পূর্ণ সদস্যদের কাছে চিঠি লিখেন রানাসিংহে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই চিঠিতে লংকান মন্ত্রী লিখেছেন,‘খেলোয়াড়দের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যা, ব্যবস্থাপনা দুর্নীতি, আর্থিক অসদাচরণ এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে নিমজ্জিত শ্রীলংকান ক্রিকেট।’
উল্লেখ্য বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের একাধিক অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছে লংকান ক্রিকেট। আইসিসি নিজেই বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাকে শাস্তি দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে শিরোপা জয়ের পর বিশ্বকাপে আর কোন সাফল্য অর্জন করতে পারেনি শ্রীলংকা। দলের খেলার মান নেমে যাওয়ার জন্য বোর্ডকে দায়ী করে আসছেন রোশান রানাসিংহে ।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :