তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হবার আগ মুর্হূতে এক ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে সিডনি টেস্টে পাকিস্তানকে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। প্রথম ইনিংসে ১৪ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে তৃতীয় দিন শেষে ৭ উইকেটে ৬৮ রান করেছে পাকিস্তান। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে মাত্র ৮২ রানে এগিয়ে সফরকারী পাকিস্তান।
বৃষ্টির কারনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিন খেলা হয় ৪৬ ওভার। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৩১৩ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৪৭ ওভারে ২ উইকেটে ১১৬ রান করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১৯৭ রানে পিছিয়ে ছিলো অসিরা। মার্নাস লাবুশেন ২৩ ও স্টিভেন স্মিথ ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্টের তৃতীয় দিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন স্মিথ। পেসার মির হামজার বলে বাবরকে ক্যাচ দেন ৩৮ রান করা স্মিথ। লাবুশেনের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন স্মিথ।
স্মিথ ফেরার পরপরই স্পিনার আগা সালমানের বলে বোল্ড হন লাবুশেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসে ৬টি চারে ৬০ রান করেন লাবুশেন।
দলীয় ১৮৭ রানেই স্মিথ ও লাবুশেনের আউটে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ নম্বরে নামা ট্রাভিস হেডও সুবিধা করতে পারেননি। ১০ রান করে পেসার আমির জামালের শিকার হন হেড। ২০৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এ অবস্থায় পাকিস্তানের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মিচেল মার্শ ও উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি। টেস্টে অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে উইকেটে সেট হয়ে যান মার্শ।
কিন্তু দলীয় ২৮৯ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ক্যারিকে শিকার করে পাকিস্তানকে দারুন এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন স্পিনার সাজিদ খান। ৩টি চারে ৩৮ রান করেন ক্যারি।
ক্যারির আউটের পর জামালের তোপে মাত্র ১০ রানে শেষ ৪ উইকেট হািরয়ে ২৯৯ রানে অলআউট হয় অসিরা। ৬টি চারে ৫৪ রান করেন মার্শ। ৬৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সফল বোলার জামাল। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয়বারের মত ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। সিরিজের প্রথম টেস্টে নিজের অভিষেক ম্যাচে ১১১ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছিলেন জামাল।
১৪ রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই মহাবিপদে পড়ে পাকিস্তান। ১ রানে ২ উইকেট হারায় তারা। প্রথম ওভারের শেষ বলে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিককে বোল্ড করেন পেসার মিচেল স্টার্ক। পরের ওভারে পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদকে শিকার করেন হ্যাজেলউড। শফিক-মাসুদের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
পাকিস্তানের শুরুর বিপদ কাটিয়ে উঠতে জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন আরেক ওপেনার অভিষিক্ত সাইম আইয়ুব ও বাবর আজম। উইকেটে সেট হয়ে হাফ-সেঞ্চুরির জুটি গড়েন তারা। কিন্তু দলীয় ৫৮ রানে আইয়ুবকে শিকার করে জুটি ভাঙেন স্পিনার নাথান লিঁও। প্রথম ইনিংসে খালি হাতে ফেরা আইয়ুব এবার ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৩ বলে ৩৩ রান করেন।
আইয়ুব ফেরার পর প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন বাবর। অকেশনাল স্পিনার হেডের শিকার হন ২৩ রান করা বাবর। টেস্টে নিজের সর্বশেষ ১১ ইনিংসে কোন হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পাননি বাবর।
এরপর দিনের শেষভাগে ম্যাজিক দেখান হ্যাজেলউড। দিনের খেলা শেষ হবার ১ ওভার আগে বোলিংয়ে আসেন তিনি। ইনিংসের ২৫তম ওভারের প্রথম বলে সৌদ শাকিলকে ২, তৃতীয় বলে সাজিদকে এবং পঞ্চম ডেলিভারিতে সালমানকে খালি হাতে বিদায় দেন হ্যাজেলউড। ৪ উইকেটে ৬৭ রান থেকে ৭ উইকেটে ৬৭ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ৬৮ রান তুলে দিন শেষ করে পাকিস্তান। উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান ৬ ও জামাল শূণ্যতে অপরাজিত আছেন। অস্ট্রেলিয়ার হ্যাজেলউড ৫ ওভারে ৯ রানে ৪ উইকেট নেন।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :