বেজিং হাফ ম্যারাথনে হল অদ্ভূত ঘটনা। জিতছিলেন একজন। কিন্তু হঠাৎই আয়োজক দেশের রানারকে জিতিয়ে দিলেন তারা। পরে সাফাই দিলেন,`ও আমার বন্ধু`। পরে অবশ্য নিজের বক্তব্য বদলেছেন তিনি। এমন অদ্ভুত ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গেছে ক্রীড়ামহলে। ভিডিও প্রকাশ্যে আসতে দেখা যায় কেনিয়ার দুই দৌড়বিদের সঙ্গে ইথিয়োপিয়ার এক দৌড়বিদ প্রথম তিনের মধ্যে ছিলেন। পিছনে ছিলেন চিনের রানার হি জি, যিনি ২০২৩ এশিয়ান গেমসে ম্যারাথনে সোনা জিতেছিলেন।
রেস যতই শেষ হয়ে আসতে থাকে ততই নিজেদের গতি কমিয়ে দিতে থাকেন আফ্রিকান দৌড়বিদরা। বলা যায় হি-কে জায়গা ছেড়ে দেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। কেনিয়ার রবার্ট কিটার, উইলি নাঙ্গাত এবং ইথিয়োপিয়ার ডিজেন হাইলু বিকিলা শেষ ১০০ মিটারে নিজেদের গতি একদম কমিয়ে দেন। আর সেই সুবাদেই প্রথম স্থানে শেষ করেন জি। এরপরই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে আয়োজক কমিটির তরফে। যদিও মুল উদ্যোক্তা বেজিং স্পোর্টস ব্যুরো মুখে কুলুপ এঁটেছে।
বেজিংয়ের হাফ ম্যারাথন যথেষ্ট ঐতিহ্যশালী এক প্রতিযোগিতা। যেখানে বিভিন্ন দেশ থেকেই দৌড়বিদরা আসেন। কিন্তু হঠাৎই এমন বিতর্কে আয়োজকরাও চাপে পড়ে গেছেন। যিনি প্রথম হয়েছে সেই হি জি নিজেও কিছু ঠিক বলে উঠতে পারছেন না। এরই মধ্যে জানা যাচ্ছে, আফ্রিকা থেকে নাকি বেশ কয়েকজন দৌড়বিদকে আনা হয়েছিল হি জি-এর দৌড়ের গতি বাড়ানোর জন্য। অর্থাৎ ম্যারাথন জেতার জন্য নয়, আর এতেই আরও বেশি প্রশ্ন উঠছে।
হি জি চিনের ম্যারাথনে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। জিতেছেন এশিয়ান গেমসে সোনাও। দেশের রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্য তাঁর বহুদিনের। সেই কারণেই তাঁর গতি বাড়ানোর জন্য কেনিয়া ও ইথিয়োপিয়া থেকে দৌড়বিদদের নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা গেছে। কেনিয়া থেকে আসা উইলি মাঙ্গাত স্পষ্টভাবেই বলেছেন, ‘আমরা তো এখানে প্রতিযোগী হিসেবে আসিনি। ফলে এটা আমাদের জন্য প্রতিযোগিতা মুলক দৌড় ছিল না। আমি জানিনা কেন উদ্যোক্তারা আমাদের জামায় আমাদের নাম লিখেছিল। এখানে তো পেস মেকার(দৌড়ের গতি বাড়ানোর জন্য ব্যক্তি) লেখা উচিত ছিল। আমায় বলা হয়েছিল দৌড়ে গতি আনতে। সেই মতো আমি দৌড়াই। আমাদের তিন জনের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওর দৌড়ানোর কথা ছিল। যাতে ও জাতীয় রেকর্ড ভাঙতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা হি জি পারেনি’।
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের তরফ থেকে অবশ্য বিষয়টা অতটাও হাল্কা করে দেখা হচ্ছে না। তাদের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে বিষয়টির ভিডিও ফুটেজ তারা দেখেছেন। যারা এই প্রতিযোগিতার মুল উদ্যোক্তা তাদের সঙ্গে কথা বলছে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার তদন্ত দল। খেলার সম্মান ও গৌরব রক্ষা করা কর্তব্যের মধ্যেই পরে, সেকথা মাথায় রেখেই তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থা। ইতিমধ্যেই ঘটনায় পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে তাঁদের তরফে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :