প্রথম দল হিসেবে পুরো মৌসুমে অপরাজিত থেকে বুন্দেসলিগা শেষ করার বিরল কৃতিত্ব অর্জণ করেছে বায়ার লেভারকুসেন। শনিবার ঘরের মাঠে মৌসুমের শেষ ম্যাচে অসবার্গকে ২-১ গোলে পরাজিত করে সব মিলিয়ে ৫১ ম্যাচে অপরাজিত থেকে এবারের মৌসুম শেষ করলো লেভারকুসেন।
এর আগে গত মাসে ইতিহাসে প্রথমবারের মত বুন্দেসলিগা শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল লেভারকুসেনের। ভিক্টর বোনিফেস ও রবার্ট এ্যান্ড্রিচের প্রথমার্ধের গোলে লেভারকুসেনের জয় নিশ্চিত হয়। এ সপ্তাহে ইউরোপা লিগের ফাইনালে আটালান্টা ও জার্মান কাপের ফাইনালে ক্লেইসারস্লটার্মের মুখোমুখি হবে জাভি আলোনসোর দল। যে কারনে এখনো তাদের সামনে ট্রেবল জয়ের ভাল সম্ভাবনা রয়েছে।
কাল ম্যাচ শেষে লেভারকুসেন কোচ আলোনসো বলেছেন, ‘এটাই আমাদের প্রাপ্য ছিল। ব্রেমেনের বিপক্ষে শিরোপা নিশ্চিতের পর এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল। আমি এই দল নিয়ে দারুন গর্বিত, দারুন সন্তুষ্ট ও দারুন খুশী। আমরা এখন এই শিরোপা উৎসব কিছুক্ষনের জন্য পালন করতে চাই, এরপর কাল থেকে নতুনভাবে আবারো দুই ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।’
এছাড়া বুন্দেসলিগার শেষ দিনে অপর ম্যাচে হেইডেনহেইমের কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে রেলিগেটেড হয়ে গেছে কোলন। ফ্রেইবার্গের বিপক্ষে স্টপেজ টাইমে গোল করে ২-১ ব্যবধানের জয়ের মাধ্যমে কোনমতে রেলিগেশন এড়িয়েছে ইউনিয়ন বার্লিন। ওয়ার্ডার ব্রেমেনের কাছে ৪-১ গোলে হারার কারনে বোখামকে দ্বিতীয় বিভাগের ফর্চুনা ডাসেলডর্ফের বিপক্ষে দুই লেগের রেলিগেশন প্লে-অফে খেলতে হবে। এই ম্যাচের পরাজিত দলকে আগামী মৌসুমে কোলন ও ডার্মস্টাডের সাথে দ্বিতীয় বিভাগে খেলতে হবে।
ঘরের মাঠ বে এরেনাতে ১২ মিনিটেই লিড পায় লেভারকুসেন। আমিনে আডিলের শটে অসবার্গ গোলরক্ষক টমাস কুবেক ভুল করতে বসলে বোনিফেস পোস্টের খুব কাছে থেক বল জালে জড়ান। মধ্যমাঠের তারকা এ্যান্ড্রিচ ২৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন। অসবার্গের টিনএজার মার্ট কোমোর ৬২ মিনিটে দুর্দান্ত স্ট্রাইকে এক গোল পরিশোধ করেন। কিন্তু এই গোল লেভারকুসেনের দুর্দান্ত মৌসুমকে নষ্ট হতে দেয়নি। সেরহু গুইরাসির জোড়া গোলে স্টুটগার্ট ঘরের মাছে ৪-০ গোলে বরুসিয়া মোচেনগ্ল্যাডবাখকে বিধ্বস্ত করেছে। এই জয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলো স্টুটগার্ট।
মৌসুমের শেষ দিনের হতাশা বায়ার্ন মিউনিখের পিছু ছাড়েনি। আন্দ্রেস ক্রামারিচের উজ্জীবিত হফেনহেইমের কাছে ৪-২ গোলের পরাজয় দিয়ে মৌসুম শেষ করেছে বায়ার্ন। ৩৪ ম্যাচে এক পয়েন্টে স্টুটগার্টের থেকে পিছিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করলো বেভারিয়ান্সরা। ইনজুরির কারনে কাল মাঠে ছিলেন না ইংলিশ তারকা হ্যারি কেন। কিন্তু কেনের অনুপস্থিতি বায়ার্নকে শুরুতে কোন সমস্যায় ফেলেনি। ৬ মিনিটের মধ্যে মাথিস টেল ও আলফোনসো ডেভিসের গোলে ২-০ ব্যবধানের লিড নেয় সফরকারীরা। দুই মিনিট পর জার্মানীর ইউরোর দলে প্রথমবারের মত ডাক পাওয়া ২১ বছর বয়সী এ্যাটাকার ম্যাক্সিমিলিয়ান বেয়ার গোলরক্ষক ম্যানুয়ের নয়্যারের ভুলে হফেনহেইমের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্বাগতিকদের। দ্বিতীয়ার্ধে ২০ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূরণ করে দলকে দারুন এক জয় উপহার দিয়েছেন ক্রামারিচ।
২০১০-১১ মৌসুমের পর এই প্রথমবারের মত বুন্দেসলিগায় শীর্ষ দুই দলের বাইরে থেকে মৌসুম শেষ করলো বায়ার্ন। দলের বিদায়ী কোচ থমাস টাচেল বলেছেন, ‘আমরা বড় কয়েকটি ব্যক্তিগত ভুল করেছি, যে কারনে ম্যাচ আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেছে। আমরা প্রতিপক্ষকে মোটেই প্রতিরোধ করতে পারিনি। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও যে কারনে চার গোল হজম করতে হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে না।’
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :