প্রথম দল হিসেবে বাছাইপর্ব শেষে ইউরোর টিকেট নিশ্চিত করা বেলজিয়ামকে নিয়ে গ্রুপ-ই’র অন্য তিনটি দলই বিশ্বাস করে সহজেই সবাইকে টপকে রেড ডেভিলসরা নক আউট পর্ব নিশ্চিত করবে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটি দখল করে রেখেছিল বেলজিয়াম। তবে সর্বশেষ বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়। স্বর্ণযুগের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় জাতীয় দল থেকে চলে যাওয়ায় বেলজিয়ামের পারফরমেন্সে কিছুটা ভাটা পড়ে।
এডেন হ্যাজার্ড অবসরে গিয়েছেন, তারকা গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া হাঁটুর ইনজুরির কারনে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মৌসুমের বেশীরভাগ সময়ই সাইডলাইনে ছিলেন। রবার্তো মার্টিনেজ কাতারে ব্যর্থতার পর কোচের দায়িত্ব থেকে সড়ে দাঁড়ান। বর্তমানে তিনি পর্তুগালের কোচ হিসেবে কাজ করছেন। ডোমেনিকো টেডেসকো এখনো যে দলটি নিয়ে মাঠে নামতে যাচ্ছেন সেই দলে প্রতিভার অভাব নেই। প্রয়োজন শুধু সঠিক সময়ে নিজেদের মেলে ধরা।
বেলজিয়ামের সাফল্যে বরাবরের মতই কেভিন ডি ব্রুইনা ও রোমেলু লুকাকুর উপর নির্ভর করছে। ম্যানচেস্টার সিটি প্লেমেকার ডি ব্রুইনা বুধবার মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচটিতে গোল পেয়েছেন। এটি ছিল ডি ব্রুইনার শততম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ২০২৩ সালের মার্চের পর এটাই তার প্রথম জাতীয় দলে খেলা।
৩২ বছর বয়সী ডি ব্রুইনা বলেছেন, ‘আমি কিছুটা চাপ অনুভব করছি, এটা সব সময়ই ছিল। জাতীয় দল তার অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের কাছ থেকে অনেক কিছুই আশা করে। আমরা এখানে লড়াই করতে এসেছি এবং নিজেদের সেরাটা দিতে এসেছি। এই জাতীয় দলের হয়ে আমার বেশ কিছু সুন্দর মুহূর্ত আছে। আবার হতাশাও আছে, এটাই ফুটবল। এখনো ম্যাচ জয়ের ক্ষুধা আছে। যখন বুঝবো যে এই ক্ষুধাটা আর অনুভব করছিনা সেদিন থেমে যাবো। এখনো মনে হয় আমার বয়স ২০ বছর।’
প্লে-অফে আইসল্যান্ডকে হারিয়ে টানা চতুর্থবারের মত ইউরোর মূল পর্বে খেলতে আসা ইউক্রেন দল দেশের জন্যই এবারের আসরে ভাল করতে চায়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ান সামরিক আগ্রাসনে ইউক্রেন এখন অনেকটাই বিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তার কারনে ইউক্রেন তাদের অনুশীলন ও ম্যাচ দেশের বাইরে খেলতে বাধ্য হচ্ছে। গত আসরে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে বিদায় নিয়েছিল। কিন্তু এটাই তাদের সেরা ইউরো পারফরমেন্স হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ঐ দলের অনেক খেলোয়াড়ই এবার জার্মানীতে খেলবে।
জিরোনার হয়ে লা লিগায় সর্বোচ্চ ২৪ গোল করা আরটেম ডোভিক দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। তার নেতৃত্বে জিরোনা প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। ভিক্টর টিসিগানকোভও জিরোনার হয়ে নিজেকে প্রমান করেছেন। মৌসুমের অনেকটা সময় রিয়াল মাদ্রিদের সাথে সমান তালে পাল্লা দিয়ে শেষ পর্যন্ত জিরোনা বার্সেলোনার পর লিগে তৃতীয় স্থান পায়। গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিনও ইউক্রেনের শক্তি বাড়িয়েছে। মাদ্রিদের গোলবারে কোর্তোয়ার স্থান লুনিন পূরণ করেছেন। বেনফিকার আনতোলি ট্রুবিনকে ছাড়িয়ে জাতীয় দলে এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে লুনিনের মাঠে নামা প্রায় নিশ্চিত। বাছাইপর্বে অবশ্য বেশীরভাগ ম্যাচেই খেলেছেন ট্রুবিন।
বাছাইপর্বে দারুন ছন্দে থাকা স্লোভাকিয়া টানা তৃতীয়বারের মত ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে খেলতে এসেছে। দলটির রক্ষনভাগের মূল শক্তি মিলান স্ক্রিনিয়ার। মধ্যমাঠে ওন্দ্রেজ ডুডা ও স্তানিসলাভ লোবোতকা সাথে রেয়ছে জুরাজ কুচা। এছাড়া ৩৭ বছর বয়সী পিটার পেকারিকতো রয়েছেনই। পেকারিক ও কুচা উভয়ই স্বাধীনতার পর প্রথম বড় কোন টুর্ণামেন্ট হিসেবে ২০১০ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন।
এই গ্রুপের একমাত্র দল হিসেবে ২০২০ ইউরোতে খেলেনি রোমানিয়া। ২০০০ সালের ইউরোতে শেষ আটে খেলার পর বড় কোন টুর্ণামেন্টে এখনো জয়বিহীন রয়েছে রোমানিয়া। যদিও এবারের আসরের বাছাইপর্ব সহজেই উতরে গেছে। গত দুই দশক ধরে তাদের জাতীয় দল বেশ সমস্যার মধ্যে দিয়ে সময় পার করছে। দেশটির শীর্ষ ক্লাবগুলোর আর্থিক সমস্যা এজন্য দায়ী।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :