রোববার গ্রুপ-এ তে নিজেদের শেষ ম্যাচে ফ্রাঙ্কফুর্ট এ্যারেনাতে স্বাগতিক জার্মানির মুখোমুখি হবে সুইজারল্যান্ড। শক্তিশালী জার্মানি ইতোমধ্যেই প্রথম দল হিসেবে দুই ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে ইউরোর নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছেন। সুইজারল্যান্ডের লক্ষ্য থাকবে গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে জার্মানদের সাথে যোগ দেবার।
আগের ম্যাচে উজ্জীবিত স্কটল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে নক আউট পর্বের আশা টিকিয়ে রেখেছে সুইসরা। ম্যাচটিতে তারকা খেলোয়াড় জিহার্দান শাকিরি একমাত্র গোলটি করেন। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় শেষ ছয় ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে সুইজারল্যান্ড।
এদিকে হাঙ্গেরিকে স্টুটগার্ট এ্যারেনাতে আগের ম্যাচে ২-০ গোলে হারিয়ে জার্মানি শেষ ষোলর টিকেট পায়। এনিয়ে জার্মানিও শেষ ছয় ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। জামাল মুসিয়ালা ও ইকে গুনডোগানের গোলে জার্মানদের জয় নিশ্চিত হয়। এর আগে স্কটল্যান্ডকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো মিশন শুরু করেছিল স্বাগতিকরা। ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে জার্মানি, দুই পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সুইসরা। স্কটল্যান্ড এক পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে তৃতীয় স্থানে। এখনো স্কটিশদের সামনেও সুযোগ রয়েছে শেষ ষোলতে খেলার। এখনো কোন পয়েন্ট অর্জণ করতে না পারা আরেক দল হাঙ্গেরি বিদায়ের শঙ্কায় রয়েছে। ২০২০ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ জার্মানি ও সুইজারল্যান্ড উয়েফা নেশন্স লিগের ম্যাচে কোলন স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল। ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হয়। মারিও গাভরানোভিচ দুই গোল করে সুইস দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। জার্মানির হয়ে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছিলেন টিমো ওয়ার্নার, কেই হাভার্টজ ও সার্জি গ্যানাব্রি।
জার্মানির হয়ে এবারের আসরে দুই গোল করেছেন মুসিয়ালা। টুর্ণামেন্টের শীর্ষ গোলদাতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মুসিয়ালা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন।
সর্বশেষ ছয়টি ম্যাচে সুইজারল্যান্ড জিতেছে তিনটিতে, ড্র করেছ তিনটি ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোতে সুইসরা ১০ গোল দিয়েছে, বিপরীতে হজম করেছে তিনটি। ছয়টি ম্যাচের মধ্যে তিনটিইে তারা আগে গোল দিয়েছে। এদিকে জার্মানি তাদের শেষ ছয়টি ম্যাচের পাঁচটিতেই জয়ী হয়েছে, ড্র হয়েছে একটি ম্যাচ। জার্মানি গোল দিয়েছে ১৩টি, হজম করেছে তিনটি।
কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যানের অধীনে এবারের জার্মান দলটি যে বেশ উজ্জীবিত তা তাদের পারফরমেন্সে দৃশ্যমান। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিফেন্ডার ম্যাক্সিমিলিয়ান মিটলস্টাডে। ইউরোর এ পর্যন্ত দুটি ম্যাচেই এই খেলোয়াড় নিয়মিত একাদশে খেলেছেন। নাগলসম্যান তার উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন। এক বছর আগে তার সাবেক দল হার্থা বার্লিন রেলিগেটেড হয়ে দ্বিতীয় বিভাগে নেমে গেছে। স্টুটগার্টে এক বছর আগে আসার পর থেকেই মিটলস্টাডে নিজেকে মেলে ধরেছেন। সদ্য সমাপ্ত বুন্দেসলিগায় তার দল স্টুটগার্ট দ্বিতীয় স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে। যেখানে মিটলস্টাডের অনবদ্য ভূমিকা ছিল। এই প্রথমবারের মত তিনি জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। মঙ্গলবার নিজের ঘরের মাঠ স্টুটগার্টে খেলতে নেমে হাঙ্গেরির বিপক্ষে জার্মানির ২-০ গোলের জয়ে দ্বিতীয় গোলটির যোগানদাতা ছিলেন মিটলস্টাডে। এই এ্যাসিস্টে একটি বিষয় অন্তত নিশ্চিত, পুনর্জাগরনের পথে থাকা জার্মানী তাদের ভবিষ্যতের খেলোয়াড়দের উপর পরিপূর্ণ আস্থা রেখেই এগিয়ে যেতে চায়।
ধুকতে থাকা জার্মানীকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে গত মার্চে নাগলসম্যান ১১টি পরিবর্ত এনেছিলেন দলে। সেই পরিবর্তনের অন্যতম ছিলেন মিটলস্টাপে। এই পরিবর্তনের পথে লিও গোরেতকা, সার্জি গ্যানাব্রি, ম্যাটস হামেলসদের মত তারকা খেলোয়াড়দের দল থেকে বাদ দেবার সাহস দেখিয়েছেন। তার পরিবর্তে স্টুটগার্ট ও বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার লেভারকুসেনের ইন-ফর্ম খেলোয়াড়দের সুযোগ দিয়েছেন।
মিটলস্টাডের সাথে স্টুটগার্টের আরো তিন খেলোয়াড় উইঙ্গার ক্রিস ফুয়েরিচ, ফরোয়ার্ড ডেনিজ উনডাভ ও ডিফেন্ডার ওয়াল্ডারমার এ্যান্টন নাগলসম্যানের দলে ডাক পেয়েছেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :