উঠতি তারকা কোডি গাকপো ক্লাব মৌসুমে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও নেদারল্যান্ডস জাতীয় দলে অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে প্রমানিত হয়েছে। যে কারনে তুরষ্কের বিপক্ষে শনিবার বার্লিনে ইউরো ২০২৪’র কোয়ার্টার ফাইনালে এই ফরোয়ার্ড ডাচদের জন্য অন্যতম আস্থার নাম হয়ে উঠেছেন।
১৯৮৮ সালে প্রথম ও একমাত্র ইউরো শিরোপা জয় করেছিল নেদাল্যান্ডস। ঐ দলে ছিলেন বর্তমান কোচ রোনাল্ড কোম্যান, রুড গুলিত, ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড ও মার্কো ফন বাস্তেনের মত দুর্দান্ত প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা। বর্তমান ডাচ দলে হয়তো সেই মানের প্রতিভা নেই। কিন্তু লিভারপুলের ২৫ বছর বয়সী লেফট উইঙ্গার গাকপো এবারের আসরে তিন গোল করে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। নেদারল্যান্ডসের সাবেকদের মুখেও শোনা গেছেন গাকপো বন্দনা। জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার পিয়েরে ফন হুইডঙ্ক ডাচ চ্যানেল এনওএসে বলেছেন, ‘গাকপো আমাদের তারকা।’
এ্যানফিল্ডে মোহাম্মদ সালাহর কারনে কিছুটা পিছিয়ে থাকায় গাকপোর সামনে সুযোগ ছিল জার্মানিতে নিজেকে প্রমানের। লিভারপুলে তার খেলাও ধারাবাহিক ছিলনা। জাতীয় দলের এই ফরোয়ার্ডের ১২ গোলের ছয়টি এসেছে বড় টুর্ণামেন্টে, যার মধ্যে তিনটি আবার দুই বছর আগের বিশ^কাপে। বড় আসরে আর একটি গোল করতে পারলে সতীর্থ সাবেক তারকা রুড ফন নিস্তেরলয় ও আরিয়েন রোবেনকে স্পর্শ করবেন গাকপো।
রোমানিয়াকে শেষ ষোলতে ৩-০ গোলে হারানোর পর কোম্যান বলেছিলেন, ‘সে একজন অসাধারণ খেলোয়াড়। বল নিয়ে তার অসাধারণ প্রতিভা আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দলের জন্য গাকপো একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার মধ্যে বিশেষ কিছু গুন রয়েছে। সৌভাগ্যবশত: সে আমাদের দলের মধ্যে সবসময়ই পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে।’
তুরষ্কের ইন-ফর্ম গোলরক্ষক মেরেত গুনকের বিরুদ্ধে গাকপো এখন কেমন খেলতে পারেন তার অপেক্ষা রয়েছে পুরো ডাচ দল। শেষ মুহূর্তে গুনোকের দুর্দান্ত সেভে তুরষ্ক শেষ ষোলতে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করেছিল।
অন্যদিকে তুরষ্কের এগিয়ে যাবার মূল অস্ত্র রিয়াল মাদ্রিদের এ্যাটাকার আরদা গুলার। ইনজুরির কারনে বেশ কিছুদিন মাঠের বাইরে থাকার কারনে রিয়ালের হয়ে মৌসুমের বেশীরভাগ সময়ই খেলতে পারেননি। কিন্তু মৌসুমের শেষ ভাগটা নিজেকে দারুনভাবে প্রমান করেছেন। স্প্যানিশ লিগ বিজয়ী রিয়ালের হয়ে কোচ কার্লো আনচেলত্তি গুলরাকে সঠিক সময় ব্যবহার করেছেন। গুলারও কোচের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। তুরষ্কের জার্সিতে এবারের ইউরোতে জ¦লে উঠেছে গুলার। ১৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড জর্জিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ৩-১ গোলে জয়ের প্রথম ম্যাচটিতে দুর্দান্ত এক গোল করেছিলেন। শেষ ষোলতে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ের ম্যাচে সেট পিস থেকে দুটি গোলেরই যোগানদাতা ছিলেন গুলার।
তুরষ্কের কোচ ভিনসেনজো মনটিলা বলেছেন, ‘সে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স দেখিয়েছে। ক্যারিয়ারে এতটা ভাল সে আগে কখনো খেলেনি। গুলারের জন্য আমি দারুন গর্বিত।’
এনিয়ে চতুর্থবারের মত এবং ২০০৮ সালের পর প্রথম বড় কোন টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তুরষ্ক। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে কাল মাঠে ফিরছেন অধিনায়ক হাকান কালহানগ্লু ও ডিফেন্ডার সামেত আকাইডিন। বার্লিনের অলিম্পিয়াস্টেডিওনে তুরষ্ক কিছুটা বাড়তি সুবিধা আদায় করবে বলে নেদারল্যান্ডস ডিফেন্ডার ডিলে ব্লিন্ড উল্লেখ করে বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য এ্যাওয়ে ম্যাচ।’
তুরষ্কের প্রায় তিন মিলিয়ন নাগরিক জার্মানীতে বসবাস করে। যে কারনে স্টেডিয়ামে অরেঞ্জ সমর্থকদের তুলনায় লাল জার্সিধারী সমর্থকদের সংখ্যাই বেশী হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :