কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল শেষে উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের সাথে কলম্বিয়ার সমর্থকদের মারামারির ঘটনায় ফুটবলারদের নিষিদ্ধ ও জরিমানা করা হয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল বুধবার উরুগুয়ের ১১ খেলোয়াড়কে শাস্তি দিয়েছে। লিভারপুলের ফরোয়ার্ড ডারউইন নুনেজ ৫ ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি জরিমানার কবলে পড়েছেন।
রদ্রিগো বেন্তানকুরকে চার ম্যাচ এবং রোনাল্ড আরাউজো, হোসে মারিয়া গিমেনেস ও মাথিয়াস অলিভেরাকে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নুনেজকে ২০ হাজার ডলার, বেন্তানকুরকে ১৬ হাজার ডলার এবং আরাউজো, অলিভেরা ও গিমেনেসকে ১২ হাজার ডলার করে জরিমানা ধার্য করেছে কনমেবল। বাকি ছয় ফুটবলার নিষেধাজ্ঞা না পেলেও তাদের জরিমানা দিতে হবে।
মারামারির ঘটনায় উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকেও ২০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে । সংস্থাটির কর্মকর্তা মার্সেলো গার্সিয়া ছয় মাসের জন্য সব ধরনের কনমেবল প্রতিযোগিতা থেকে হয়েছেন নিষিদ্ধ। ঘটনার দিন গ্যালারিতে তাকে পানির বোতল ছুড়তে দেখা গিয়েছিল।
কনমেবলের এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। শাস্তি কার্যকরের সময় কবে থেকে গণনা হবে, সেটি নিশ্চিত করেনি দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কনমেবল আয়োজিত সকল ম্যাচ এই শাস্তির আওতায় থাকবে।
ফ্লোরিডায় আগামী রোববার ফিফা প্রীতি ম্যাচে গুয়াতেমালার মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে। এরপর দলটি বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে ৬ সেপ্টেম্বর প্যারাগুয়ে এবং ১০ সেপ্টেম্বর ভেনেজুয়েলার মুখোমুখি হবে।
গত ১০ জুলাই উত্তর ক্যারোলিনার ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে আসরের দ্বিতীয় সেমিতে উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার মঞ্চে যায় কলম্বিয়া। সেমিতে তাদের কাছে হেরে স্বপ্ন ভাঙে উরুগুয়ের। হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে গিয়ে হুট করে বদলে যায় পরিস্থিতি। দলটির কয়েকজন ফুটবলার তেড়ে যান গ্যালারির দিকে।
একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়ান কলম্বিয়ার সমর্থকদের সঙ্গে। ডারউইন নুনেজ এবং রোনাল্ড আরাউজো হাতাহাতিতে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন। মাঠেই উত্তেজিত অবস্থায় দেখা যায় উরুগুয়ের সুয়ারেজ এবং কোচ মার্সেলো বিয়েলসাকে। বেশ ক্ষুব্ধ অবস্থাতে কথা বলছিলেন দুজনে। এরপর গ্যালারিতে দেখা যায় উরুগুয়ের দুই তারকা ডারউইন নুনেজ আর রোনাল্ড আরাউজোকে। সঙ্গে ছিলেন ডিফেন্ডার গিমেনেজ।
আর্জেন্টিনার সংবাদ মাধ্যমে খবর, উরুগুয়ের খেলোয়াড়দের বেশকিছু আত্মীয়-স্বজন গ্যালারির ওই অংশে ছিলেন। তারা বাজে আচরণের শিকার হয়েছেন, এমন অভিযোগ ওঠার পর থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত।
ঘটনার পর সাক্ষাৎকারে উরুগুয়ে অধিনায়ক গিমেনেজ বলেছেন, পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে এমন কাজে বাধ্য হয়েছেন তারা।
‘কর্তৃপক্ষ থামিয়ে দেয়ার আগেই আমি কিছু বলতে চাই। পরে তারা কিছু বলতে দেবে না। তারা চায় না আমরা এসব নিয়ে কথা বলি। সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের পরিবারও গ্যালারিতে থাকে, শিশুরাও থাকে। এটা পুরোপুরি একটা বিপর্যয়। আমাদের পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করতে আমাদের এগিয়ে যেতে হয়েছে।’
অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে বাজে আচরণ করেছে কলম্বিয়ার ওই সমর্থকরা। গিমেনেজ এমন দাবি করে বলেছেন, ‘এটা গুটিকয়েক সমর্থকের ভুল। তারা অনেকবেশি পান করে ফেলেছিল। তারা জানে না কীভাবে পান করে নিজেদের সামলে রাখতে হয়।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :