পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপে মাত্র ১৫০ রানে অলআউট হয়েছিল ভারত। তবে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাসপ্রিত বুমরাহর সঙ্গে বাকি পেসারদের রুদ্ররূপে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৬৭ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টিম ইন্ডিয়ার চেয়ে এখনো ৮৩ রান পিছিয়ে স্বাগতিকরা।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচের প্রথম দিনেই উইকেটের পতন হয়েছে ১৭টি। দীর্ঘ ৭২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্টের এটি প্রথম দিনে সর্বোচ্চ উইকেট পতনের ঘটনা। ১৯৫২ সালে সর্বশেষ এমনটি ঘটেছিল।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি ভারত। জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স এবং মিচেল স্টার্কদের তোপে দুই সেশনের আগেই অলআউট হয়েছে ভারতীয়রা। সফরকারীদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেছেন ৮ নম্বরে নামা নিতিশ কুমার রেড্ডি।
দুই অভিষিক্ত খেলোয়াড় হারশিত রানা এবং নিতিশকে নিয়ে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতের আপদকালীন অধিনায়ক বুমরাহ। তবে অধিনায়কের সেই সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা।
দিনের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে স্টার্কের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন যশস্বী জসওয়াল। স্কোরবোর্ডে ১৪ রান উঠতে ফেরেন তিনে নামা দেবদূত পাডিক্কেল। বাজে ফর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি বিরাট কোহলিও।
দলের বিপর্যয়ের সময় কেবল ৫ রান করে ফিরেছেন কোহলি। হ্যাজলউডের শর্ট ডেলিভারি তার ব্যাটের কোণায় লেগে ধরা পড়ে স্লিপে। এই নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে ২০ রানের কমে আউট হলেন কোহলি। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটেছিল ৭ বছর আগে।
এক প্রান্তে যাওয়া-আসার মিছিল চললেও নিজের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লোকেশ রাহুল। তবে তাকেও দাঁড়াতে দেননি স্টার্ক। রিভিউ নিয়ে তাকে কট বিহাইন্ডে আউট করেন এই পেসার। ৭৪ বলে ২৬ রান করে আউট হন রাহুল।
মধ্যাহ্ণ বিরতির পরেও ভারতের অবস্থার কোনো পরিবর্তন আসেনি। লাঞ্চের পর তৃতীয় ওভারে মিচেল মার্শের শিকার হয়ে ফেরেন ধ্রুব জুরেল। ওয়াশিংটন সুন্দরও ফেরেন দ্রুত। তাকেও ফেরান মার্শ।
৭৩ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর খানিকটা লড়াই করেন রিশভ পন্ত এবং নিতিশ। দুজনে মিলে গরেন ৪৮ রানের জুটি। ৩৭ রান করা পন্তকে ফিরিয়ে ভারতকে আরও বিপদে ফেলেন প্যাট কামিন্স।
নিতিশ রানা এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করে গেলেও টেইলেন্ডারের কেউই তাকে সঙ্গ দিতে পারছিলেন না। বুমরাহ এবং হারশিত আউট হন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে। শেষদিকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন নিতিশও। আর সেটা করতে গিয়েই কামিন্সের বলে ক্যাচ হয়ে ফিরতে হয় তাকে। ১৫০ রানে থামে ভারতের ইনিংস। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন হ্যাজেলউড। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক, কামিন্স এবং মার্শ।
বুমরাহর আগ্রাসী উদ্বোধনী স্পেলে তিন ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠান, অস্ট্রেলিয়ার স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৯ রান। রিভিউতে অভিষিক্ত নাথান ম্যাকসুইনিকে (৮) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। স্লিপে উসমান খাজা (১০) ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। স্টিভ স্মিথকে (০) প্রথম বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন।
ট্র্যাভিস হেড (১১) এবং মিচেল মার্শও (৬) বেশিক্ষণ টেকেননি। মার্নাস লাবুশেন, ৫২ বলে মাত্র ২ রানে মাটি কামড়ানো ব্যাটিং করলেও মোহাম্মদ সিরাজের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বুমরাহর চতুর্থ শিকারে পরিণত হন। দিনশেষে অ্যালেক্স ক্যারি ১৯ ও মিচেল স্টার্ক ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
বুমরাহ মাত্র ১৭ রান খরচায় পান ৪ উইকেট। মোহাম্মদ সিরাজ ২টি ও হার্ষিত রানা একটি উইকেট তুলে নেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :