ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ টেস্টের প্রথম দিনেই ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটাররা। টপ অর্ডারের চার ব্যাটারই ৫০ কিংবা তার থেকে বেশী রান করায় বক্সিং ডে টেস্টে স্বাগতিকরা ৬ উইকেটে ৩১১ রান কওে প্রথম দিন শেষ করেছে।এর মধ্যে অভিষিক্ত টিনএজ ওপেনার স্যাম কোনস্টাস ছিলেন পুরো ব্যাটিংয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে।
টস জিতে অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ৮৭ হাজার সমর্থকের সামনে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা হতাশ করেনি। ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হয়ে দিন শেষে বড় স্কোর নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। ১৯ বছর বয়সী কোনস্টাস ৬৫ বলে করেছেন ৬০ রান। এর মধ্যে চলমান সিরিজে ভারতের সেরা বোলার জাসপ্রিত বুমরাহর এক ওভারে নিয়েছেন ১৮ রান। দিন শেষে স্টিভ স্মিথ ৬৮ ও কামিন্স ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। মার্নাস লাবুশানে ৭২ ও উসমান খাজার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭। ভারতীয় সব বোলারদের উপরই চড়াও হয়ে খেলেছে অসি ব্যাটাররা। যদিও শেষ সেশনে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল ভারতীয় শিবিরে। এর মধ্যে ডেঞ্জারম্যান ট্রাভিস হেডকে শূন্য রানে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠিয়েছেন বুমরা। ৭৫ রানে বুমরাহ নিয়েছেন ৩ উইকেট।
অভিষেকেই নিজের জাত চেনানো কোনস্টাস বলেছেন, ‘এত বড় দর্শক উপস্থিতি আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। এমন পরিবেশে আগে কখনই খেলিনি। আমি স্বাধীন ভাবে খেলেছি ও নিজের সাথে লড়াই করেছি। কিছু রান যোগ করতে পেরেছি, তাতে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। কিন্তু যেভাবে আউট হয়েছি তাতে কিছুটা হতাশ হয়েছি। আশা করছি আগামীকালও আমরা এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবো।’
পার্থে ভারত ২৯৫ রানে জয়ের পর এডিলেডে ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত হয়। বৃষ্টি বিঘ্নিত ব্রিসবেন টেস্টটি ড্র হওয়ায় পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-১’এ সমতা বিরাজ করছে।
ভারতীয় ব্যাটিং কোচ অভিষেক নায়ার বলেছেন, ‘আজ সব কৃতিত্বই আমি স্যামকে দিব। যে ধরনের আগ্রাসন নিয়ে সে ব্যাটিং শুরু করেছে তাতেই আমরা পিছিয়ে পড়েছি। কিন্তু আমাদের বোলারদেরও দিন শেষে কৃতিত্ব দিতে হচ্ছে। এই কন্ডিশনে বোলিং করা মোটেই সহজ নয়। একটা সময় নিজেদের কৌশলের উপর অটল থাকতে হয়েছে। মধ্যাহ্ন বিরতির পর আমরা শক্তভাবে ফিরে আসতে পেরেছি।’
ন্যাথান ম্যাকসুইনির ইনজুরির কারণে দলে সুযোগ পাওয়া কোনস্টাস ও খাজা মিলে উদ্বোধনি জুটিতে ৮৯ রান যোগ করেন। এটাই স্বাগতিকদের সিরিজে সেরা উদ্বোধনী জুটি।
স্পিনার রবিন্দ্র জাদেজার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে কোনস্টাস সাজঘরে ফিরলে প্রথম উইকেটের পতন হয় অস্ট্রেলিয়ার।
ম্যাচ শুরুর আগে কোনস্টাস বলেছিলেন বুমরাহকে সামলানোর তার কিছু পরিকল্পনা আছে। বুমরাহর এক ওভারে দুটি চার ও একটি ছয় মেরে তার প্রমানই দিয়েছেন কোনস্টাস। এর মাধ্যমে স্বাগতিক সমর্থকরাও দারুন উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। হতাশ কোহলি একসময় কিছুটা আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে কোনস্টাসের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। মাত্র ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোনস্টাস।
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অভিষিক্ত খেলোয়াড় মধ্যে এটা তৃতীয় দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড। অপর প্রান্তে খাজাও কোনস্টাসকে দারুন সহযোগিতা করেছেন।
ক্যারিয়ারের ২৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে খাজাও বেশীদুর যেতে পারেননি। ১২১ বলে ৫৭ রানে বুমরাহর বলে মিডউইকেটে কেএল রাহুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এরপর দলের হাল ধরেন লাবুশানে ও স্মিথ। চা বিরতি পর্যন্ত এই জুটি অপরাজিত ছিল। আকাশ দ্বীপের এলবিডব্লিউর আবেদন থেকে রক্ষা পান স্মিথ। শেষ পর্যন্ত ৭২ রানে ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকারে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফিরেন লাবুশানে। এডিলেড ও ব্রিসবেনে সেঞ্চুরি হাঁকানো বিপদজনক হেড অবশ্য মাত্র সাত বল ক্রিজে ছিলেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :