অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত শতরানের দেখা পান বিরাট কোহলি। শুরুতেই সেঞ্চুরি করায় মনে করা হচ্ছিল বুঝি এবারের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে ব্যাট হাতে ঝড় তুলবেন বিরাট। বাস্তবে দেখা যায় একেবারে ভিন্ন ছবি। সিরিজের বাকি চারটি টেস্টে ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হন কোহলি। শেষ ৭টি ইনিংসে একবার মাত্র ৩০ রানের গণ্ডি টপকাতে সক্ষম হন তিনি।
বিরাট এবারের বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির ৫টি ম্যাচের ৯টি ইনিংসে ব্যাট করতে নামেন। ২৩.৭৫ গড়ে তিনি সংগ্রহ করেন সাকুল্যে ১৯০ রান। স্ট্রাইক-রেট ৪৭.৯৭। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কোহলি সিরিজে প্রতিবার আউট হন অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে। হয় স্লিপে, নতুবা কিপারের দস্তানায় ধরা দেন বিরাট।
স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটে রানের খরা ও একই ভাবে আউট হওয়ার ধরণ দেখে কোহলির টেকনিক নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। প্রশ্নচিহ্ন দেখা দেয় তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এমন অবস্থায় কোহলির সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের মিল খুঁজে পেলেন রিকি পন্টিং। সেই সঙ্গে অজি তারকা বিশ্বাস জ্ঞাপন করলেন যে, কোহলির মধ্যে এখনও ক্রিকেট বাকি রয়েছে।
বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে কোহলির পারফর্ম্যান্স নিয়ে আইসিসি রিভিউয়ে পন্টিং বলেন, ‘আপনার দেখতেই পাচ্ছেন, ওকে কতটা মরিয়া দেখাচ্ছে। ও যত মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে, কাজ ততই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে কখনও কখনও আপনি যত বেশি চেষ্টা করবেন, তত কম সাফল্য মেলার আশঙ্কা থেকে যায়।’
পরক্ষণেই নিজের কেরিয়ারের সঙ্গে তুলনা টেনে পন্টিং বলেন, ‘কী করে রান করব, সেটা ছেড়ে কীভাবে ক্রিজে টিকে থাকব, সেই ভাবনাই আমাকে গ্রাস করতে শুরু করেছিল। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আমি ভাবতে শুরু করেছিলাম, কীভাবে আউট হব না। দল আমার কাছ থেকে যেমন চায়, আমি সব সময় ঠিক সেরকমই নিখুঁত এবং দৃষ্টান্তমূলক ক্রিকেট খেলতে চাইতাম।’
পন্টিং আরও বলেন, ‘অথচ যখন আমি আমার সেরা ছন্দে ব্যাট করতাম, তখন এই সব ভাবনা আমার মাথায় আসত না। আমি খোলা মনে ক্রিজে যেতাম এবং শুধু রান করার কথা ভাবতাম। যদি হাফভলি বল পেতাম, ড্রাইভ করতাম। শর্ট বল পেলে পুলশট খেলতাম। আমি এখন বিরাটের মধ্যে তেমনটাই লক্ষ্য করছি। লক্ষ্য করলে বুঝবেন, যেভাবে ও আউট হচ্ছে, বলগুলো ওভাবে খেলতেই চাইছে না। ও যেটা করতে চাইছে না, ঠিক সেটাই হচ্ছে। অফ-স্টাম্পের বাইরের বলে মানসিক একটা জড়তা দেখা যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, টেস্টে রিকি পন্টিংয়ের ব্যাটিং গড় যেখানে ৫১.৮৫, সেখানে কেরিয়ারের শেষ ৫ বছরে তাঁর টেস্ট গড় ছিল ৩৯.৪৮। সুতরাং, কেরিয়ারের শেষ পর্যায়ে পন্টিং যে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন না, তাঁকে যে লড়াই চালাতে হয়েছে নিজের পরিচিত ফর্ম খুঁজে পেতে, সেটা প্রমাণ হয় এই পরিসংখ্যানেই।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :