ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জোস বাটলার বলেছেন, আফগানিস্তানের ক্রিকেট বয়কট করাকে তিনি ‘সঠিক’ বলে মনে করেন না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই দলের নির্ধারিত ম্যাচের আগে এমনই মত রেখেছেন বাটলার।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচটি ২৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। লেবার এমপি টোনিয়া অ্যান্টোনিয়াজ্জি ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গুল্ডকে লেখা এক চিঠিতে আফগানিস্তানের ১.৪ কোটি মহিলার ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ ও ‘লিঙ্গ বিভাজন’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তার চিঠিটি ১৬০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ রাজনীতিবিদের স্বাক্ষর ছিল, যেখানে তিনি ইংল্যান্ডের পুরুষ ক্রিকেট দলকে আহ্বান জানান, যেন তারা ‘আফগানিস্তানে তালিবানের শাসনে মহিলাদের প্রতি ভয়ংকর আচরণের বিরুদ্ধে কথা বলে।’ তিনি বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্য়াচ বয়কট করলে এটি ‘একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে যে এমন নৃশংস নির্যাতন সহ্য করা হবে না।’
গুল্ড এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি একক কোনও দেশের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত নয়। বরং আইসিসির নেতৃত্বে একটি সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। তার এই অবস্থান সমর্থন করেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, যিনি আইসিসি-কে ‘নিজেদের নিয়ম বাস্তবায়নের’ আহ্বান জানান। এবং ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সচিব লিসা ন্যান্ডি, যিনি বলেন, বয়কট ‘উল্টো ক্ষতিকর’ হতে পারে।
ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে কলকাতায় কথা বলতে গিয়ে বাটলার জানান, তিনি এবং তার দল ‘বিশেষজ্ঞদের’ মতামতের ওপর নির্ভর করবেন, তবে তিনি আশা করেন ম্যাচটি যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। জোস বাটলার বলেন, ‘এ ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনি যতটা সম্ভব জানার চেষ্টা করেন। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে অনেক বেশি জানেন, তাই আমি রোব কি (ইসিবির পুরুষ ক্রিকেট ব্যবস্থাপনা পরিচালক) এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমি মনে করি না যে বয়কট করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।’
এই পরিস্থিতি ২০০৩ সালের বিশ্বকাপের ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন নাসের হুসেনের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দলকে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানানো হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তারা না খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ইংল্যান্ড মূল্যবান পয়েন্ট হারিয়ে নকআউট পর্বে যেতে ব্যর্থ হয়। তবে বাটলার আত্মবিশ্বাসী যে এবার খেলোয়াড়দের ওপর তেমন কোনও চাপ থাকবে না।
জোস বাটলার বলেন, ‘খেলোয়াড়রা এই বিষয় নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু নিজেদের শিক্ষিত করার চেষ্টা করছি এবং বিভিন্ন উৎস থেকে বিষয়টি সম্পর্কে জানছি। এ নিয়ে বেশ কিছু ভালো লেখা প্রকাশিত হয়েছে, যা আমি পড়েছি, এবং আমি বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছি তাদের মতামত জানার জন্য।’ এরপরে বাটলার বলেন, ‘আমি এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দিই, তবে একজন খেলোয়াড় হিসেবে আপনি চান না রাজনীতি খেলাধুলাকে প্রভাবিত করুক। আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিতে চাই, সেই ম্যাচ খেলতে চাই এবং একটি ভালো টুর্নামেন্ট কাটাতে চাই।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :