চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গত রবিবার `মাদার অফ অল ব্যাটল`-এ মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। মহম্মদ রিজওয়ানদের ২৪১ রান তাড়া করে ভারত ৪৫ বল হাতে রেখে হেসেখেলে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে নিয়েছে। ১১১ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস খেলে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। তবে চর্চায় এসেছেন হার্দিক পান্ডিয়াও। বাবর আজম ও সৌদ সাকিলকে আউট করেই খবরে আসেননি তিনি। দেশের স্টার অলরাউন্ড খবরে এসেছেন তার পরনের ঘড়িটির কারণেও। হার্দিকের হাতে শোভা পেয়েছিল মহার্ঘ এক ঘড়ি।
দুবাইয়ে হার্দিকের হাতে শোভা পেয়েছিল RM 27-02 Tourbillon Rafael Nadal মডেলের ঘড়ি। এই ঘড়ির প্রসঙ্গে আসার আগে জানিয়ে রাখা দরকার যে, হার্দিক কিন্তু `ওয়াচ এনথুসিয়াস্ট`, রিশা মিল, প্যাটেক ফিলিপ, ওডোমা পিগে, রোলেক্সের মতো বিশ্ববন্দিত ব্র্যান্ডের ঘড়ি রয়েছে তার সংগ্রহে। কোটি কোটি টাকার ঘড়ি পরা হার্দিকের কাছে জলভাত। সোনা-হিরে-নীলকান্ত মণি খচিত ঘড়িই হার্দিকের হাতে শোভা পায়।

এবার আসা যাক হার্দিকের ভারত-পাক ম্যাচের ঘড়ির প্রসঙ্গে। `আরএম ২৭-০২ টুবিওন রাফায়েল নাদাল` সিরিজটি ২০১৫ সালে তৈরি করেছেন বিশ্ববন্দিত ঘড়ি নির্মাতা রিশা মিল। সুইস ঘড়ি নির্মাতা রিশা, তিনি তার বেশ কিছু মডেলের ঘড়ি সীমিত সংস্করণ করেই তৈরি করেন। `আরএম ২৭-০২ টুবিওন রাফায়েল নাদাল` ঘড়িটি মাত্র ৫০ পিস তৈরি হয়েছে। হার্দিক ছাড়াও এই ঘড়ি রয়েছে মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্ত আম্বানিরও। হার্দিকের ঘড়িটির দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকার মতো!
এখন প্রশ্ন এই ঘড়ি কেন এত দামি? কী এমন বিশেষত্ব এই ঘড়ির? যেখানে এই ঘড়ির দামে একটি রোলস রয়েস ঘড়ি চলে আসতে পারে! এক তো রিশা মিলের বিরাট ব্র্যান্ড ভ্যালু, দুই এই ঘড়ির নির্মাণশৈলী ও উপকরণ। হার্দিকের ঘড়ির মডেলটিরই কথা ধরা যাক। কেসব্যান্ড এবং বেসপ্লেট একসঙ্গে জুড়ে তৈরি হয়েছে, যার ফলে দুটি উপাদান আলাদা করে রাখার দরকার হয়নি। বেসপ্লেট তৈরি হয়েছে গ্রেড ৫ টাইটেনিয়াম নিয়ে। নীলকান্তমণি স্ফটিকের সঙ্গে কার্বোন ফাইবারের সংমিশ্রণও দেখা যায়।

এখন প্রশ্ন হার্দিকের ঘড়ির মডেলে কিংবদন্তি টেনিস খেলোয়াড় রাফায়েল নাদালের কেন নাম জুড়ল? ঘটনাচক্রে ২০১০ সালে রিশা মিলের সঙ্গে প্রথম দেখা হয় নাদালের। রিশাই লাল সুরকির রাজাকে ঘড়ি পরে টেনিস খেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন? রাফা তা শুনেই নাকচ করে দিয়েছিলেন, স্পেনের রাজপুত্রের দাবি ছিল যে, কব্জিতে ভারী ঘড়ি বেঁধে খেলা সম্ভব নয়, কারণ ১৪০ থেকে ১৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টায় ধেয়ে আসা বলের মোকাবিলা করতে হয় র্যাকেট দিয়ে। কিন্তু রিশা মিল তখন নাদালকে বানিয়ে দিয়েছিলেন RM 027, যা সেই সময়ে ছিল সবচেয়ে হাল্কা টুবিওন। নাদালের নামেই সেই ঘড়ি বানানো হয়। এরপর থেকে নাদা টেনিসকে অবসর জানানো পর্যন্ত রিশা মিলের ঘড়িই কব্জিতে বেঁধে খেলেছেন। বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকজন টেনিস প্লেয়ারই ছিলেন বা আছেন, যারা ঘড়ি পরে খেলেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :