চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে রোহিত শর্মা অবসর নেবেন, এমন একটা জল্পনা চলছিল। তবে ট্রফি জেতার পর অবসর নিয়ে একটা বাক্যও উল্লেখ করলেন না তিনি। বরং যে সব কথাবার্তা বললেন, তাতে স্পষ্ট যে খেলা চালিয়ে যেতে চান। বিশেষত এক দিনের ক্রিকেট। এমনকি ২০২৭ বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিলেন না। বার বার তার মুখে উঠে এল আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার কথা। জানালেন, এ ভাবেই খেলা চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি দুই সতীর্থের ভূয়সী প্রশংসা করলেন।
সঞ্চালক ইয়ান বিশপের প্রশ্নের উত্তরে রোহিত বললেন, “দারুণ লাগছে জিততে পেরে। গোটা প্রতিযোগিতা জুড়েই আমরা ভাল খেলেছি। ফাইনালেও জেতার অনুভূতিটা বাকিগুলোর থেকে আলাদা। যে ভাবে খেলেছি সেটা বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে।”
এর পরেই আগ্রাসনের কথা উঠে এল তার মুখে। বললেন, “অনেকেই জানেন, আমার স্বাভাবিক খেলা নয় এটা। কিন্তু এই ধাঁচেই খেলতে চেয়েছিলাম। যখন আপনি আলাদা কিছু করছেন, তখন দল এবং কোচেদের সমর্থন খুব দরকার হয়। আগে রাহুল ভাইয়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। এখন গৌতি ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা দু’জনেই আমাকে সমর্থন করেছে। তাই আগ্রাসী খেলা চালিয়ে গিয়েছি। গত কয়েক বছর অন্য ভাবে খেলেছি। এখন অন্য ভাবে খেলে ফলাফল পাচ্ছি।”
কী ভাবে সাফল্য পাওয়া যাবে সেটাও তার কাছে স্পষ্ট। রোহিত বলেছেন, “সবার আগে বুঝতে হবে পিচ কী রকম। সেই অনুযায়ী খেলতে হবে। আজ প্রথম পাঁচ-ছয় ওভার কী ভাবে খেলব সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা ছিল। আগে আগ্রাসী খেলতে গিয়ে আউট হয়েছি। তবে শট মারার ধরনের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। দলের ব্যাটিং গভীরতা আমাকে আরও স্বাধীন ভাবে খেলার সুযোগ করে দেয়। জাদেজার মতো ক্রিকেটার আট নম্বরে খেলতে নামছে। এটাই আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিতে বাধ্য।”
এক সময় টানা উইকেট পড়লেও যে ভাবে কেএল রাহুল শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচ বার করে দিয়েছেন তার প্রশংসা করেছেন রোহিত। একই সঙ্গে বোলার বরুণ চক্রবর্তীর প্রশংসাও শোনা গিয়েছে তার মুখে।
রোহিতের কথায়, “কেএলের মানসিকতা নিয়ে কী আর বলব। চাপে পড়লে কখনও সেটা দেখাতে ভালবাসে না। আজ একাই ম্যাচটা শেষ করে এল। চাপের মুখে ঠিক যে শটটা খেলতে হবে সেটাই খেলে। বাকিদের স্বাধীন ভাবে খেলার সুযোগ করে দেয়। আজ যে রকম হার্দিককে খোলা মনে খেলতে দিল।”
রোহিতের সংযোজন, “আগেই বলেছি, বরুণের মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার রয়েছে। এ ধরনের পিচে খেলতে গেলে ওর মতো বোলারদেরই দরকার। শুরুর দিকে খেলেনি। পরের দিকে খেলে অনেক উইকেট নিয়েছে। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে পাঁচ উইকেটের কথাই ধরুন। আমাদের সাহায্য করেছে।”
এক দম শেষে রোহিতের মুখে এল দুবাইয়ের দর্শকদের কথা। ভারতের প্রতিটি ম্যাচেই যাঁরা মাঠ ভরে এসেছেন। রোহিত বললেন, “যাঁরা মাঠে এসে আমাদের সমর্থন করেছেন তাঁদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখানকার দর্শকেরা বরাবরই অসাধারণ। দুবাই আমাদের ঘরের মাঠ নয়। কিন্তু সমর্থকদের জন্যই এটা ঘরের মাঠ হয়ে উঠেছিল। এত লোক আমাদের খেলা দেখতে এসেছেন। ট্রফি জিতে ওদের তৃপ্তি দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।”
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :