নর্ডিক রিজিয়ন! বিশ্বের ভ্রমণ পিপাসুদের যেন দুহাত বাড়িয়ে হাতছানি দেয়। এই ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা। এই নিয়ে কৌতূহলেরও শেষ নেই, শেষ নেই মুগ্ধতার। প্রাচীন নরওয়ে দস্যুদের কাহিনি থেকে শুরু করে প্রকৃতির হাজারো ম্যাজিক সব মিলিয়ে রহস্যময়তা আর নান্দনিকতায় ভরা এই নর্ডিক রিজিয়নের প্রত্যেকটা দেশ।
কী কী দেশ আছে এই নর্ডিক রিজিয়নে
প্রথমেই আসে আইসল্যান্ডের নাম। শীতকালের একঘেয়ে সাদা বরফের চাদরে মুড়ে যাওয়া আইসল্যান্ড গরমকালে ধীরে ধীরে রূপ ফিরে পায়, তখন আইসল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হয়ে ওঠে ট্যুরিস্ট আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। আগ্নেয়গিরির ধার ঘেঁষে আনাচকানাচে, গোল-গোল রাস্তা ধরে গাড়ি নিয়ে একবার সফর শুরু করলে মনে হতে থাকবে যেন স্বর্গ! তবে বছরের অন্য কোনো সময়ে এমনটা দেখার সৌভাগ্য হবে না।
অন্যতম ভ্রমণ স্থান হচ্ছে ল্যান্ডম্যানালোগরের আশ্চর্য সব রিয়োলাইট মাউন্টেইনস আর হটপুলস। তবে, এই সব জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর দু্ইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হল, একটি শক্তপোক্ত চারচাকা গাড়ি আর একজন দক্ষ ড্রাইভার। আইসল্যান্ডের এই পুরো পথটা প্রায় ৮০০ মাইলের একটা সম্পূর্ণ রিং রোড সার্কেল। ঘুরতে সময় লাগে পুরো একটা সপ্তাহ। মাঝেমাঝেই পড়বে আশ্চর্য সব দৃষ্টিনন্দন জায়গা। কেউ কেউ আবার এই গোটা সার্কেল না ঘুরে কিছু স্পেসিফিক জায়গা বেছে পাড়ি দেন।
আইসল্যান্ডের গোল্ডেন সার্কেলের জিওথার্মাল পুল আর ঝরনাগুলো ঘিরে থাকা রাস্তাগুলোও গরমকালে ট্যুরিস্টদের ভিড়ে বেশ জমজমাট থাকে। এছাড়াও আইসল্যান্ডের উত্তরের দিকে ডায়মন্ড সার্কেলে ট্যুরিস্ট তুলনামূলক কম দেখা গেলেও, সৌন্দর্যে কোনো কমতি নেই।
যে সব ট্যুরিস্টরা রোড ট্রিপে আগ্রহী, তাদের জন্য ওয়েস্টফোর্ডস ওয়ে হয়ে নর্থওয়েস্ট ফোর্ডস রিজিয়নের দিকে যাওয়ার পথটি হতে পারে আদর্শ। পথে পড়বে ডিনজান্ডি ঝরনা, বোলাফজল মাউন্টেনের মুগ্ধকর দৃশ্য আর লাত্রাবার্গের মনোরম পরিবেশ। আইসল্যান্ডের পর নর্ডিক রিজিয়নে গরমকাল উপভোগ করার জন্য পরের গন্তব্য হতেই পারে সালবার্ড। মে মাসের শুরু থেকে অগস্টের শেষ পর্যন্ত সূর্যের আলোয় ভরে থাকে সালবার্ড। তাই মাউন্টেইন হাইকিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আউটডোর অ্যাক্টিভিটিসও করা যায় দিনের যে কোনো সময়েই।
গরমের সময় আবার আর্কিপেলাগো হয়ে ওঠে সমস্ত বণ্যপ্রাণীদের একটা মস্ত বাড়ি। রংবেরঙের পাখিরা সেখানে বাসা বানায়, সমুদ্রে দেখতে পাওয়া যায় ওয়ালরাশ থেকে শুরু করে শিল, তিমি ইত্যাদি সামুদ্রিক প্রাণীদের। এবার আসছে সুইডেন। নির্দিষ্ট করে বললে, সুইডেনের গটল্যান্ড। বাল্টিক সাগরের বিশাল বড় এই দ্বীপটি হচ্ছে সুইডেনের অন্যতম ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন যা প্রাচীন ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঠাসা। নিখাদ গরমের ছুটি কাটাতে দূরদূরান্ত থেকে বিদেশি ট্র্যাভেলাররা ফ্লাইটে জাহাজে করে চলে আসেন স্ক্যান্ডিনেভিয়ান বিউটি-কে উপভোগ করার জন্য।
টল্যান্ড আইল্যান্ডের মেন শহর ভিসবি। ভিসবি হচ্ছে প্রাচীন ভাইকিংসদের ইতিহাসে ঠাসা এবং এটি ইউনেস্কোর অন্যতম একটি প্রোটেক্টেড সাইট। এছাড়াও কিছু ছোট ছোট ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন হিসেবে লিস্টে রাখাই যায় কোপেনহেগেন, হেলসিঙ্কি, ওসলো, রেয়কাভিক, স্টকহোম এসব জায়গাগুলোকে।
নর্ডিক রিজিয়নের এই দেশগুলোতেও ঘুরতে যাওয়ার বিধিনিষেধ আস্তে আস্তে উঠে যেতে শুরু করেছে। ফলে আবার ট্রাভেলরদের ভিড় জমতে শুরু করেছে সেখানকার দেশগুলোতে। তাহলে আর দেরি কেন, মনোরম রোড ট্রিপ হোক বা সামার রিল্যাক্সেশন– যে কোনও অবসর কাটানোর জন্য এই গরমে আপনার ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন হতেই পারে নর্ডিক রিজিয়ন।
একুশে সংবাদ.কম/ডে বা/সম
আপনার মতামত লিখুন :