ইন্টারনেটে অডিও এবং ভিডিও কল করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দিয়েছে। এক্ষেত্রে এককভাবে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি একজন নারী। তাঁর নাম মারিয়ান ক্রোক।
১৯৫৫ সালে আমেরকিার নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া ক্রোক ১৯৯০ এর দশকের শুরুর দিকে দুই হাজারের বেশি প্রকৌশলীর একটি দল নিয়ে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন। মার্কিন টেলিযোগাযোগ কোম্পানি এটিঅ্যান্ডটিতে তাঁর নেতৃত্বে ১৯৯৫ সালে ভিওআইপির কাজ শেষ হয়।
ভিওআইপি পরবর্তীতে ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগের দুয়ার খুলে দিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভিওআইপির হাত ধরে পরবর্তীতে জুম, ফেসটাইম, স্কাইপির মতো অ্যাপ্লিকেশন বিকাশ লাভ করে।
ভয়েসের ডেটা ডিজিটালাইজ করে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রান্সমিট করার মধ্য দিয়ে কাজ করে ভিওআইপি। এই প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগ বিকাশ লাভ করার পর প্রচলিত টেলিফোন ব্যবস্থা বলতে গেলে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
করোনা মহামারির সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসে জুম বা অন্য মাধ্যমে ভিডিও কল ক্রোকের উদ্ভাবনের প্রভাবের কথা সবাইকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়। ভিওআইপিকে ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অপরিহার্য বলে ধরা হয়।
ক্রোকের নামে প্যাটেন্ট করা উদ্ভাবনের সংখ্যা ২০০ এর বেশি। তাঁর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন ‘টেক্সট ডোনেশন’ প্রযুক্তি। মোবাইল ব্যবহারকারীরা টেক্সট ডোনেশন অ্যাপ ব্যবহার করে দুর্যোগকবলিত অঞ্চলের সার্বিক তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। রিয়েল-টাইমে এটি করা যায়। উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে এই প্রযুক্তি।
ক্রোক ২০১৪ সালে গুগলে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে নানা উদ্ভাবন চালিয়ে যাচ্ছেন। গুগলের প্রকৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে ডিজিটাল ব্যবধান কমিয়ে আনতে, প্রযুক্তি খাতে বর্ণ ও লিঙ্গ সমতা তৈরি করতে কাজ করছেন ৬৯ বয়সী ক্রোক।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবদানের স্বীকৃতি হসেবে ২০২২ সালে ক্রোককের নাম আমেরিকার ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেমে স্থান করে নেয়। এর আগে প্যাট্রিসিয়া বাথ নামে আরেকজন কৃঞ্চাঙ্গ নারী এ বিরল সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।
একুশে সংবাদ/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :