চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ২৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যা গতমাসের তুলনায় ২৪টি বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণের ৫৭টি, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৭টি, ধর্ষণ ও হত্যার ২টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫ জন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী। ধর্ষণের শিকার ৫৭ জনের মধ্যে ১৬ জন শিশু, ১৭ জন কিশোরী, অপরদিকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩ জন কিশোরী ও ১৪ জন নারী এবং ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন ২ জন নারী। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ১৯টি, যৌন হয়রানি ২৬টি, শারীরিক নির্যাতনের ৩৬টি ঘটনা ঘটেছে।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রেরিত ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারি, ২০২৫’–এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকার তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতি মাসে এমএসএফ এই প্রতিবেদন তৈরি করে। ২৮ ফেব্রুয়ারি এ প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠায় মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ)।
প্রতিবেদন বলা হয়, ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় ছিল দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বেশি। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে আত্মহত্যা কিছুটা কমলেও হত্যার ঘটনা বেড়েছে। এছাড়া পরিবারিক সহিংসতা ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বিগত মাসগুলোর মতো একই ধারাবাহিকতায় ঘটেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গতমাসে মহাসড়কে প্রকাশ্যে দম্পতিকে কোপানো, চলন্ত বাসে সংঘবদ্ধ ডাকাতদল কর্তৃক যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যাওয়া, বাসের মধ্যে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় নাগরিক জীবন উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কগ্রস্ত ছিল।
এমএসএফ মতে, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তা দৃশ্যমান হয়নি। ফলে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ঘটেছে, যা জাতীয় জীবনে অন্যতম প্রধান উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে ২ জন শিশু, ১২ জন কিশোরী ও ৩৪ জন নারীসহ মোট ৪৮ জন আত্মহত্যা করেছেন। গতমাসে অপহরণের শিকার হয়েছেন ৩ জন শিশু, ২ জন কিশোরী ও ৫ জন নারী, অপরদিকে ২ জন শিশু, ৩ জন কিশোরী ও ৩ জন নারী নিখোঁজ রয়েছেন। এ ছাড়া গতমাসে ১ জন শিশু, ২ জন কিশোরী ও ৬ জন নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ মোট ৬৫ জন শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে ২৬ জন শিশু ও কিশোরী রয়েছেন।
প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, গতমাসে ১ জন শিশুর ধর্ষণের চেষ্টার ও ১ জন কিশোরীর ধর্ষণের ঘটনা সমাজপতিরা আপস করেছেন, যা প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করে বেআইনিভাবে সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গতমাসে ৪ জন মৃত ও ১ জন জীবিত মোট ৫ জন নবজাতক শিশুকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা অমানবিক ও নিন্দনীয়।
একুশে সংবাদ/ই.ট/এনএস
আপনার মতামত লিখুন :