ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১১ টায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমীন হোসেন। তারা উভয়ই ছাত্রলীগ নেতা শাহাজালাল সোহাগের কর্মী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ড্রাইভার মামুন শেখ জানান, গতকাল রাতে তিনি জয়পুরহাট থেকে খুলনায় ট্রাকে করে সরিষার তেলের কন্টেইনার নিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ ট্রাকের চাকা পাংচার হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী বাইক নিয়ে সেখানে হাজির হন এবং গাড়ির চাবি নিয়ে নেন। পরে তারা ড্রাইভারের কাছে গাঁজা আছে কিনা জানতে চান। গাঁজা না পেয়ে ছুরির ভয় দেখায় এবং মারধর করে। তারা দশ হাজার টাকা দাবি করলে ড্রাইভার তাদেরকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তারা ড্রাইভারের মানিব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে তারা পাঁচটি তেলের কন্টেইনার দাবি করে। এসময় গাড়ির চাবি ও দুইটি তেলের কন্টেইনার নামালে স্থানীয় কয়েকজন চলে আসলে তারা স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
পরে প্রধান ফটকের সামনে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী সিকিউরিটি অফিসার আব্দুস সালাম সেলিমকে জানালে তৎক্ষনাৎ তিনি সেখানে উপস্থিত হন। এরপর প্রক্টরিয়াল বডিকে জানানো হলেও প্রক্টরিয়াল বডির কেউই উপস্থিত হন নি। পরে ভুক্তভোগী ড্রাইভার ইবি থানায় অবহিত করলে এস আই সাইফুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে ভুক্তভোগী ড্রাইভার মামুন শেখ আরও বলেন, তারা গাড়ির চাবি ও জোরপূর্বক মানিব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এতো বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে যদি ছাত্ররা ছিনতাইকারী হয় তাহলে শিক্ষিত আর অশিক্ষিতদের মধ্যে পার্থক্য থাকলো কই। টাকা নেওয়ার পর আমি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে শুধু চাবিটা ম্যানেজ করে দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা চাবিটাও উদ্ধার করে দেয় নি। পরে ভিন্ন উপায়ে গাড়ি স্টার্ট করে চলে এসেছি। আজ মঙ্গলবার ( ১৯ জুলাই) থানায় মামলা করবো।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য বলেন, গাড়িটি দ্রুত গতিতে এসে ক্যাম্পাসের মেইনগেটের সামনে দাঁড়ায়। এর কারণ জানতে চাইলে ড্রাইভার বলেন, গাড়িটির চাকা পাংচার হয়েছে ঠিক করার জন্য দাঁড়িয়েছি। পরে ড্রাইভারের আইডি কার্ড বা লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলাম?
টাকা ছিনতাই, চাবি নেওয়া বা কন্টেইনার খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা , ভিত্তিহীন। তবে ড্রাইভারের চোখেমুখে ভয় দেখে, তার কাছে জানতে চাইলাম ভিতরে কি জিনিস আছে দেখা? এসময় চাবি নিয়ে কন্টেইনার খুলে ভিতরে সরিষার তেল দেখে আমরা চলে আসছিলাম।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ও গভীর রাতে হওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডির কেউ উপস্থিত হতে পারেন নি। তবে আমাদের সিকিউরিটি অফিসার সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি ইবি থানার ওসির সাথে কথা বলেছি। ভুক্তভোগী ড্রাইভার থানায় অভিযোগ করলে তারপর আমাদের ছাত্ররা অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/আ.হো/এস.আই
আপনার মতামত লিখুন :