আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে সমাবর্তনের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ঢাবির নিজস্ব শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অধিভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করলেও অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল ডিসপ্লেতে সমাবর্তন অর্থাৎ’ প্রজেক্টরের মাধ্যমে সমাবর্তনের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা (১ নম্বর ভেন্যু) ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে এবং ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা (২ নম্বর ভেন্যু) ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে এলইডি স্ক্রিনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অংশ নেবেন।
এদিকে ডিজিটাল সমাবর্তনকে ঘিরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের শেষ ছিলো না। তাদের কাছে বিষয়টি অপমানজনক মনে হলে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে আলাদাভাবে সমাবর্তনের দাবিও তুলে ধরেছিলেন কেউ কেউ।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী আম্বিয়া জাহান আরজু বলেন, "ডিজিটাল সমাবর্তন প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখা আর ঘরে বসে টিভিতে দেখা একই বিষয়। যেমনটা আমরা বায়স্কোপে দেখে থাকি। খুবই দুঃখের বিষয় যে, অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে দেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম বিদ্যাপিঠসমূহ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহনকৃত এসব শিক্ষার্থীদের সাথে সমাবর্তনের নামে এমনই এক হাস্যরসাত্মক, ব্যঙ্গকৌতুক করে আসছেঢাবি প্রশাসন।
যার ফলে সমাজের চোখে হাস্যকর পাত্রে পরিণত হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবং তাদের উচ্চশিক্ষা৷" তিতুমীর কলেজর শিক্ষার্থী আসিফ রহমান বলেন, "সমাবর্তন নামে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের সম্মান করা অপেক্ষায় টাকা নিয়ে অপমান উপহার দেওয়ার ন্যায়। কেউ টাকা দিয়ে সরাসরি সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করছে। আবার কেউ সমান টাকা দিয়ে তা দূর থেকে দেখছে। নিজেদের স্বকীয়তা/ অস্তিত্বের কতটা সংকটাপন্ন অবস্থা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পূর্বের চেয়ে বর্তমানে রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়ানো হলো। এরপর আবার অন্য কলেজে গিয়ে ডিজিটাল প্রজেক্টরের সামনে বসে আমাদের নিজেদের সহপাঠী-ভাই-বন্ধুদের উল্লাস-উদযাপন দেখব! এটা যতটা সম্মানের, তার চেয়ে লজ্জাজনকও।"
আলাদা সমাবর্তনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক `সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য` এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আলাদা করে সমাবর্তন করা একটি কষ্টসাধ্য ব্যাপার এবং সমার্বতনের জন্য প্রয়োজন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির। যেহেতু সাত কলেজই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত তাই এদের আলাদা করে সমাবর্তনেরও কোন সুযোগ নেই। "
তিনি আরও বলেন, "সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। আলাদা কমিটি করা হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠুভাবে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শেষ করতে পারবো।"
একুশে সংবাদ/ জা.হা.প্রতি/ রখ
আপনার মতামত লিখুন :