ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা মাইকে প্রচার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ও প্রধান ফটক এলাকায় এ ঘোষণা প্রচার করা হয়।
ঘোষণায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে আজ হতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বক্ষণিকভাবে নিজ নিজ পরিচয়পত্র বহন করতে হবে। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা বৃদ্ধির স্বার্থে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মাইকিং করা হচ্ছে। বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসহ অন্যান্য ফটকসমূহে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও গতকালকের ঘটনাটির বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে সন্ধ্যায় বসে আলোচনা করা হবে।’
জানা যায়, সোমবার দুপুরে মফিজ লেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী তার বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের লেকে আড্ডা দিচ্ছিলো। সেখানে বহিরাগত স্থানীয় দুজন যুবক এসে তাদের বান্ধবীদের সহ ভিডিও ধারণ করে। তাদেরকে ভিডিও ডিলিট করতে বললে শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এসময় বখাটেদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হলে তারা দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীরা শেখপাড়া বাজারে মোটরসাইকেলে তেল নিতে গেলে স্থানীয় আকাশসহ ৪/৫ জন তাদের উপর অতর্কিত হামলা করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সুপ্ত ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জিসাদ।
পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ও ট্যায়ারে জ্বালিয়ে আন্দোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো- ইবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা কারীর যথাযথ বিচার, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও বহিরাগত মুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা৷ এদিকে আন্দোলন চলাকালে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহগামী যানবাহনগুলো আটকে পড়ে।
আন্দোলন চলাকালীন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদসহ প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করেন। এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রক্টর পুলিশের প্রটোকলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে কুষ্টিয়া জেলার অতিরিক্ত (বিশেষ শাখা) পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে তারা। এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে ভিসি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১১টায় আন্দোলন স্থগিত করেন।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :