ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক আবাসিক ছাত্রকে হলের বৈধ সিট থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থীর নাম মাহাদী হাসান। তিনি ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী।
শনিবার (১ এপ্রিল) ওই শিক্ষার্থী প্রভোস্ট বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি বিগত কয়েকদিন যাবৎ আমার আবাসিকতাপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করছিলাম। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিদ্দিক (পরিসংখ্যান বিভাগ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) ভাইয়ের মাধ্যমে তরুন (বাংলা বিভাগ, ২১০৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) ভাই, ফাহিম ফয়সাল ( ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) ভাই ও রাজু (বাংলা বিভাগ, ২০১৮-১৯) ভাই আমাকে হলের ৪২৭ নম্বর কক্ষে আসতে বলে। আমি তখন ইফতার শেষ করে নামাজের জন্য যাচ্ছিলাম। ফোন পেয়ে আমি দ্রুত হলে চলে আসি। সেখানে পৌঁছে দেখতে পাই, আমার বই, খাতা, তোষক ও বালিশ রুমের বাইরে করিডোরে পড়ে আছে। সেখানে আগে থেকেই তরুন ভাই, ফাহিম ভাই, রাজ ভাইসহ আরও একজন ভাই উপস্থিত ছিলেন। আমি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করি।
প্রথমে ফাহিম ভাই আমাকে বলে, ‘তুই মাহাদী?’ আমি হ্যাঁ বলি। তারপর তিনি আমাকে বলেন, ‘তুই কোন কক্ষে থাকিস?’ আমি বলি, ‘ ৪২৮ আমার আবাসিক কক্ষ। আমি ওই কক্ষেই আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে অবস্থান করছি। তখন ফাহিম বলেন, ‘আগে কোথায় ছিলি?’
আমি বলি, ‘৩০৮-এ মেহেদি হাসান তানভীরের অতিথি হিসেবে ছিলাম। এখন আমার কক্ষ ৪২৮ বরাদ্দ হয়েছে, আমি এখানেই থাকবো।’ তখন রাজু ভাই আমাকে ধমক দিয়ে বলে, ‘তুই কে! তোকে আগে কখনও হলে দেখিনি তো। কে তোরে হলে তুলেছে? আর ওইসব আবাসিকতার কাহিনি বাদ দে, আমরা যা বলবো হলে তাই হবে।’
এ সময় তরুন ভাই বলে, ‘আমারে চিনিস তুই, আমি কে? এখনও ভালোয় ভালোয় ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে কোথায় যাবি যা, ৩০৮ এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি আমরা জানি না। পরে তিনি রুমের বাইরে করিডোরে ফেলে দেওয়া আমার বই, খাতা, তোষক বালিশসহ আমার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এইখানে তোর সবকিছু আছে, নিয়ে চলে যাস।’
অভিযোগের বিষয়ে ফাহিম ফয়সাল বলেন, কাউকে সিট থেকে নামানো হয়নি। আমরা শুধুমাত্র দুজনের মধ্যে একটা সমঝোতা করে থাকতে বলেছি।
তরিকুল ইসলাম তরুন বলেন, ওই ছেলে হলে আগে এক কক্ষে থাকতো পরে অন্য কক্ষে উঠতে চায়। আমরা ওকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। প্রাথমিক কিছু কথা হয়েছে, হুমকি বা এ জাতীয় কোন কথা আমি বলিনি।
অন্য অভিযুক্ত রাজুর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, আমি বিষয়টি জানিনা। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখি। ছাত্রলীগ কখনো কাউকে বৈধ সিট থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না।
লালন শাহ হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবাইদুর রহমান বলেন, আমরা অভিযোগপত্র পেয়েছি। এ বিষয়ে আলোচনা করে বিষয়টির খোঁজখবর নেবো।
একুশে সংবাদ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :