`অধিভুক্ত সাত কলেজে ছাত্রলীগের কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে গিয়ে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।`- ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের এ বক্তব্যে ঢাবি অধিভুক্ত সাতটি কলেজের ছাত্রলীগ শাখার বর্তমান দায়িত্বশীল বিভিন্ন ছাত্রনেতারা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ঢাবি ছাত্রলীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত অধিভুক্ত সাত কলেজের একাডেমিক সংকট নিরসনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে এ কথা বলেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
তার এ মন্তব্যের পরেই মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত সায়েন্সল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও ক্যাম্পাসের মূলফটকের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এ সময় তাদেরকে ‘সেন্ট্রালেই আছি, সেন্ট্রালেই থাকবো`, ‘ঢাবির সিদ্ধান্ত মানি না, মানবো না’, ‘অবৈধ সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’ ‘ঢাবির অধীনে, যাবোনা যাবোনা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
উক্ত মন্তব্যের প্রতিবাদে সরকারি বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এছাড়াও কলেজ সাতটির ছাত্রলীগের বিভিন্ন শাখার নেতৃবৃন্দরা ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের মন্তব্যের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রতিক্রিয়া লেখেন।
এ প্রসঙ্গে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ রিপন মিয়া বলেন, `ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ ছাত্রলীগের যোগ্য কর্মীদের মধ্যে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হোক।`
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, `আপনি আগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র পড়েন তারপর কথা বলেন। একটি জেলা ইউনিটকে কোন সাহসে আপনি উপজেলা ইউনিটে নামাতে চান? আপনি যত শিক্ষার্থীর নেতৃত্ব দেন আমি তার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থীর নেতৃত্ব দেই।`
কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর এ প্রসঙ্গে বলেন, `মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপার প্রমোশন যুগে তারা চাইল আমাদের ডিমোশন। সাত কলেজ ছাত্রলীগের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ আছে।`
কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফারুক হাওলাদার বলেন, `বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের তত্ত্বাবধানে দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপার নির্দেশে আমরা কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগ সুসংগঠিত আর সাতটি সুপার ইউনিটের অন্য একটি সুপার ইউনিটের অধীনে যাওয়ার সুযোগ নেই।`
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার রাহাত মোড়ল তার ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হওয়ার শতভাগ যোগ্যতা আছে যারা সাত কলেজকে সুপার ইউনিটে রূপ দিয়েছে। সবার আগে সাত কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক চাই।`
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর ইসলাম আশিক এক ফেসবুক বার্তায় লিখেছেন, `আগে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজ ছাত্রলীগের যোগ্য কর্মীদের মধ্যে থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হোক।`
এক ফেসবুক বার্তায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সুস্মিতা বাড়ৈ লেখেন, `ইডেনের আজকে ১৫০ বছরের ইতিহাস আছে। বিট্রিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন সবকিছুতে ইডেন নারী শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের অবদান কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ থেকে কম না। আমরা পুতুল নই আমাদের যেভাবে খুশী নাচানো বন্ধ করতে হবে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপা ইডেনের ভিপি ছিলেন। আমাদের একটি আলাদা ঐতিহ্য এবং মর্যাদা আছে। আমাদের কারো আন্ডারে গিয়ে রাজনীতি করতে হবেনা আমরা আমাদের মর্যাদা নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট।`
একুশে সংবাদ/জ.হ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :