আমাকে স্যার না বললে শিক্ষককে স্যার বলা যাবে না, দাবী পাবিপ্রবি কর্মকর্তার

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে স্যার ডাকতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীসহ তার বিভাগের সকল শিক্ষার্থী। সেই সাথে একটি অভিযোগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরাবর জমা দেন তারা।

এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং তারা তাদের দাবি উপস্থাপন করেন। দাবির মধ্যে রয়েছে, তিনি কর্মকর্তা হয়ে শিক্ষককে কেন ভাই সম্বোধন করতে বললেন এইটার সুস্পষ্ট ব্যাখা দিতে হবে। তাঁকে ভাই বলে কেন সম্বোধন করা যাবে না এইটার যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। তিনি ৩০ মিনিট পরে আসবেন এইটার আশ্বাস দিয়ে কেন পরবর্তীতে বিষয়টি সমাধানে আসলেন না সেই মিথ্যাচারের ব্যাখা দিতে হবে। যেই শিক্ষার্থীর সামনে স্যারকে ভাই সম্বোধন করতে বলছেন, সেই শিক্ষার্থীসহ বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের কাছে ওই কর্মকর্তাকে নম্রতার সহিত ভুল স্বীকার করতে হবে।

হেনস্তার শিকার হওয়া সেই ছাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তার একাডেমিক রেজিষ্ট্রেশন কার্ডের সংশোধন করার জন্য শেখ মাহমুদ কাননের (সেকশন অফিসার গ্রেড -২) অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। শেখ মাহমুদ কাননকে ভাই বলে সম্বোধন করায় উক্ত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেও ভাই বলতে বলেন। ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকদেরকে ভাই বলতে নারাজ হলে বাক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তাকে স্যার বলতে বাধ্য করেন। এতে ওই শিক্ষার্থী ভীত ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

পরবর্তীতে ঘটনাটির প্রতিবাদ জানিয়ে রসায়ন বিভাগের সকল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৪-১২-২০২৩৫ ইং তারিখ আমাদের বিভাগের ৩য় বর্ষের ১ম সেমিষ্টার এর এক মেয়ে শিক্ষার্থী তার রেজিস্ট্রেশন কার্ডের সংশোধন করতে রেজিস্ট্রার অফিসের একাডেমিক শাখায় গেলে সেকশন অফিসার শেখ মাহমুদ কানন উক্ত ছাত্রীকে হেনস্তা করেন এবং স্যার বলতে বাধ্য করেন। তিনি বলেন তাকে স্যার না বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও স্যার বলা যাবেনা। এর ফলে উক্ত ছাত্রী হেনস্তার শিকার হওয়ার কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের প্রধান ড. মোঃ নাজমুল হোসেনের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে অভিযোগ পত্র পেয়েছি। উপাচার্য ম্যামের উপস্থিতিতে আগামী শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সেই কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টা একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। আমার ১২ বছর কর্মজীবনে এমন পরিস্থিতি হয়নি। কারো সাথেই আমি কখনো খারাপ ব্যাবহার করিনি এবং করবোও না ইনশাআল্লাহ। বিষয়টা আমি একভাবে বলেছি উনি হয়তো বুঝেছেন অন্য ভাবে। তাদেরকে বুঝাইতে ব্যর্থ হয়েছি।

একুশে সংবাদ/দ.ক.প্র/জাহা