AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইবিতে বিবস্ত্র করে রাতভর র‌্যাগিং-নির্যাতনের শিকার আরেক শিক্ষার্থী


Ekushey Sangbad
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৮:৫৪ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
ইবিতে বিবস্ত্র করে রাতভর র‌্যাগিং-নির্যাতনের শিকার আরেক শিক্ষার্থী

২০২৩ সালে নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে রাতভর র‌্যাগিং ও নির্যাতনের বছর না পেরুতেই একই কায়দায় আবার ছাত্র হলের গণরুমে এক নবীন শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করে রাতভর র‌্যাগিং ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফী এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাগর। তারা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে পরিচয়পর্বের জন্য ডাকে অভিযুক্তরা। কক্ষে যাওয়ার পর তার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করে অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থীরা। এসময় ভুক্তভোগীকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ, রড দিয়ে আঘাত করা, জোরপূর্বক উলঙ্গ করে বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখা ও নাকে খত দেয়া এবং আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বার বার রুম থেকে বের করে দেয়া হয় বলে জানায় ভুক্তভোগী। ওইদিন রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয় তার উপর। এছাড়াও ভয় দেখিয়ে বার বার বেডসহ জিনিস-পত্র বাইরে ফেলে দেয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগী।

এ দিকে ভয়ভীতি দেখানোয় ঘটনার চারদিন পরেও প্রশাসনের কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী বলেন, গত বুধবার আমার সঙ্গে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে পরে হলের ছাত্রলীগের সিনিয়র ভাইয়েরা বিষয়টা মিমাংসা করে দেয়। এরপর অভিযুক্তদের হলে তেমন একটা দেখা যায়নি। আমি চাই না কোন ঝামেলা হোক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্রলীগ কর্মী জানান, ঘটনার পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় সংলগ্ন এলাকায় ডেকে নিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে অভিযুক্তদের ক্ষমা চাইতে বলেন ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী হাসান হাফিজ ও নাসিম আহমেদ মাসুম। এ সময় অভিযুক্তদের চড়-থাপ্পড় দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন তারা। পরে ওই দিন রাতে ফের ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের হলে ডেকে নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিষয়টি মীমাংসা করে দেন ছাত্রলীগ কর্মী শাহিন আলম, মাসুম ও লিখন।

এদিকে, র‌্যাগিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মোহাম্মদ সাগর। তিনি বলেন, এরকম কোনকিছু ঘটেনি। এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ওইদিন হলে ছিলাম না। তবে কথার একপর্যায়ে হলের পাশের রুমে ছিলেন বলে জানান সাগর। এদিকে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ব্যক্তিগতভাবে কেউ অপরাধ করলে দায় সংগঠন নেবে না। বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। ঘটনাটি শোনার পর আমরা ভুক্তভোগী ছাত্রের পাশে দাঁড়িয়েছি। তাকে গণরুম থেকে অন্য রুমে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও সার্বিক সহায়তা ভুক্তভোগীকে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এই বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা ড. শেলীনা নাসরীন বলেন, বিষয়টি আমি শুনিনি। তবে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে ভয় না পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, আমি আনঅফিসিয়ালি বিষয়টা শুনেছি। পরে নিজের থেকেও খোঁজখবর নিয়েছি, হলের নেতাদের ডেকে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এবং মিউচুয়াল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি আমার কাছে ভয়াবহ বলে মনে হচ্ছে। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ না আসলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমার পক্ষে কঠিন। আমি কোন কিছুর পরোয়া করবো না, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসনে আজাদ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে নবীন ছাত্রী ফুলপরীকে বিবস্ত্র করে রাতভর র‌্যাগিং ও নির্যাতনের ঘটনায় দেশব্যাপী আলোচিত ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এই ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে আজীবন বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।

 


একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
 

Link copied!