বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অভিন্ন নীতিমালার শর্ত অনুযায়ী পদোন্নতির যোগ্যতা থাকলেও প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডে পদোন্নতি পাচ্ছেন না কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ১১ জন অধ্যাপক। প্রায় দুই বছর আগে তারা আবেদন করলেও এখনো পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগ নেয়নি কুবি কর্র্তৃপক্ষ। ফলে শিক্ষকরা তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ব্যাহত হচ্ছে তাদের শিক্ষা ও গবেষণা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম ও দ্বিতীয় গ্রেডের অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য ২০২২ সালের ১৬ মার্চ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন হয়। একটি বৈঠক করেছে ওই কমিটি। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পর অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যদিও শিক্ষকদের চাপের মুখে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিটি পুনর্গঠন হয়।
পদোন্নতির আবেদন করা ১১ শিক্ষকের মধ্যে গ্রেড-১-এ আবেদন করা দুজন হলেন অর্থনীতি বিভাগের ড. মো. জাকির ছায়াদউল্লাহ খান এবং রসায়ন বিভাগের ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান। গ্রেড-২ পদে আবেদনকারী ৯ শিক্ষক হলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ড. মো. আবু তাহের, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ, ড. শেখ মকছেদুর রহমান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন ও ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র দেব, অর্থনীতি বিভাগের ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দ, মার্কেটিং বিভাগের ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার এবং বাংলা বিভাগের ড. জিএম মনিরুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ গোলাম মওলা।
ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালার শর্তে বলা হয়েছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অধ্যাপক পদে পদোন্নতি/পদায়নের পর ন্যূনতম চার বছর চাকরি (কোয়ালিফাইং চাকরির মেয়াদ) এবং স্বীকৃত জার্নালে বিষয়ভিত্তিক গবেষণাধর্মী দুটি নতুন আর্টিকেল প্রকাশের শর্তে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে দ্বিতীয় গ্রেড প্রাপ্ত হবেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় গ্রেডধারী অধ্যাপকরা মোট চাকরিকাল (কোয়ালিফাইং চাকরির মেয়াদ) ন্যূনতম ২০ বছর এবং গ্রেডের সর্বশেষ সীমায় পৌঁছানোর দুই বছর পর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রথম গ্রেডপ্রাপ্ত হবেন। তবে এ সংখ্যা মোট অধ্যাপকের ২৫ শতাংশের বেশি হবে না।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, ‘২৯ মে ২০২০ সালে আমি গ্রেড-২-এর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু দুই বছর পরও আমাকে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না কেন, সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এটা আসলে প্রশাসনিক অদক্ষতার প্রমাণ। আমি মনে করি অভ্যন্তরীণ কমিটির মাধ্যমে মূল্যায়ন করে দ্বিতীয় গ্রেডে অধ্যাপকদের পদোন্নতি দেওয়া উচিত। এ ছাড়া প্রথম গ্রেডে যারা আছেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অধ্যাপকের ২৫ শতাংশ সীমারেখায় পড়ে; তাদেরও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া উচিত।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘অধ্যাপকদের পদোন্নতির জন্য একটা কমিটি হয়েছে। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মিটিং করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’ ওই কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কমিটি অনেক আগে হয়েছে, কিন্তু কমিটির দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম এখনো নেওয়া হয়নি।’
এ কমিটির বৈঠক কেন হচ্ছে না, তা জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া মেলেনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :