ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) গণরুমে রাতভর বিবস্ত্র করে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা মিললেও ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘসূত্রিতা করছে প্রশাসন। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৩ সপ্তাহ পেরোলেও পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুরুতর শাস্তি হলে তা পরবর্তী সিন্ডিকেটে পাঠানো হয়। তবে আগামী ১৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভা হয়নি। এই সিন্ডিকেট সভায় র্যাগিংয়ের ঘটনাটি যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান। এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন ঢিলেমি করছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি লালন শাহ হলের গণরুমের এক ছাত্রকে বিবস্ত্র করে রাতভর র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠে দুই ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রকাশ্যে এলে ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথক তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল কর্তৃপক্ষ। প্রায় দেড় মাস পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি।
এছাড়া তদন্ত শুরুর দুই মাস পর ২২ এপ্রিল প্রতিবেদন জমা দেয় হল প্রশাসনের গঠিত কমিটি। উভয় কমিটির প্রতিবেদনেই ঘটনার সত্যতা মেলে। এসময় ভুক্তভোগীকে লোহার রড দিয়ে পেটানো ও পর্ণগ্রাফি দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী গুরুতর অভিযুক্ত হলেন- শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের মুদাচ্ছির খান কাফি ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মোহাম্মদ সাগর। এছাড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের উজ্জ্বল হোসেনের কম সংশ্লিষ্টতা ছিল। তারা সবাই ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, এই সিন্ডিকেটে কয়েকটি প্রমোশন এবং বেশকিছু ছোটখাটো সিদ্ধান্ত ছাড়া তেমন কিছু যাচ্ছে না। এখনও ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভা না হওয়ায় র্যাগিংয়ের ঘটনাটি এই সিন্ডিকেটে না যাওয়ার সম্ভবনা বেশি।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ নানাবিধ ব্যস্ততায় এগুলো একটু পিছিয়ে গেছে। সামনে সিন্ডিকেট সভার পরে হয়তো খুব দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, রেজিস্ট্রার মহোদয়ের নিকট ফাইল জমা আছে। খুব দ্রুতই শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং দিয়ে বিষয়টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/আ হ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :