বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালিত হয়েছে।
অত্র কলেজের ২২৩ নং কক্ষে বাংলা বিভাগের সহোযোগি অধ্যাপক জনাব আবু আল কায়সারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক গৌতম রায়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অত্র কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মোহসীন কবির।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফরিদা ইয়াসমিন, অফিসার্স কাউন্সিলের সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. মোতালেব হোসেন, সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক তাহমিনা ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক রাবেয়া খাতুন, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নুসরাত আফরিন সুমা, বাংলা বিভাগের প্রভাষক তানজিল ইসলাম। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার সভাপতি শাহরিয়ার রাহাত মোড়ল।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র আল কুরআন ও গীতা পাঠের মধ্যে দিয়ে এ দুই মহান ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্ভোদন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক গৌতম রায়।
এ সময় রবীন্দ্র ও নজরুল প্রবন্ধ্য পাঠ করে মুল পর্বের আনুষ্ঠানিকা শুরু করেন প্রভাষক তানজিলা ইসলাম ও প্রভাষক নুসরাত আফরিন সুমা। এরপর পর্যায়ক্রমে রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, বক্তৃতা, নৃত্য পরিবেশনা, কবিতা আবৃত্তিসহ বিভিন্ন মন্ত্রমুগ্ধ্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় সাম্য ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর বিদ্রোহী কবিতা আবৃত্তি করে বেশ প্রশংসা ও আলোড়ন সৃষ্টি করেন বাংলা ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহ পরান ও বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর সোনারতরী কবিতা আবৃত্তি করেন বাংলা ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শামসি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মোহসীন কবির বলেন, `রবীন্দ্রনাথ ও কাজী নজরুল আমাদের বাঙালি জাতীয় জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের কলম চলত অধিকার বঞ্চিত মাজলুমদের হয়ে শোষিত ও নিপিড়ীত মানবের পক্ষে, জালিমের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় ছিল সদা আপোষহীনভাবে। তারা নির্দিষ্ট গোত্র প্রেমের উর্ধে উঠে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের কবি হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিলেন। তারা একে অন্যের প্রতি ছিলেন সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তিরা সর্বদা এই দুই মহান ব্যক্তিদ্বয়ের মাঝে অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে তুলনা করে বাঙালী জাতীয়তাবাদকে কলুষিত করেন। তাই শুদ্ধ বাংলা সংস্কৃতিকে ধারণ, লালন এবং চর্চা করতে রবীন্দ্র ও নজরুল এর বিষয়ে আমাদের আরো বিস্তৃত জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই দুজন মানুষ সম্পর্কে আরো জানতে হবে। এবং দেশ প্রেমের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হতে হবে।`
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে সভাপতি গৌতম রায় অনুষ্ঠানে আগত সবাই কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, `আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং সেই সঙ্গে সবাই জানবে বাংলা সাহিত্য কতটা সমৃদ্ধ এবং সুবিশাল। তাই তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে এই সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।`
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :