ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেগা প্রকল্প থেকে সোয়া ৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও ভাগবাটোয়ারার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীসহ ৮ প্রকৌশলীকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে আগামী ৩০ জুন ও ১ জুলাই দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার দিতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জুন) তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আট প্রকৌশলী হলেন- ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দীন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন ও আলিমুজ্জামান টুটুল, নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) বাদশা মামুনুর রশিদ, মোহা. নুর আলম, উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) প্রসেনজিৎ কুমার বিশ্বাস, রাজিব হোসাইন ও সোহাগ ইসলাম সাগর। এর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দীন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন ও আলিমুজ্জামান টুটুলকে ১ জুলাই ও বাকিদের ৩০ জুন ডাকা হয়েছে।
এর আগে গত ১০ ও ১১ জুন তাদের সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আজহার ছুটিতে অফিস বন্ধকালীন রেজিস্ট্রার দপ্তরে এসেছে বলে জানা গেছে। ফলে যথাসময়ে সাক্ষাৎকার দিতে পারেননি প্রকৌশলীরা। তাই গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুদকের সঙ্গে আলোচনা করে সাক্ষাতের নতুন সময় নির্ধারণ করে রেজিস্ট্রার দপ্তর।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় প্রশাসন ভবন নির্মাণে সর্বশেষ চলতি বিলে ভুয়া বিল দিয়ে ৬ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন ও ভাগ-বাটোয়ারা করে আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। তাই অনুসন্ধানের স্বার্থে আট প্রকৌশলীর বক্তব্য গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছে দুদক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, দুদক প্রকৌশলীদের বক্তব্য শুনতে ডেকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু ওই সময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় চিঠি পড়ে ছিল। পরে দুদকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরকে সাক্ষাতের নতুন সময় জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৩৭ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্পের কাজের সোয়া ৬ কোটি টাকার ভুয়া বিল উত্তোলন ও ভাগবাটোয়ারার অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, শাপলা ফোরামসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি উড়ো চিঠি আসে। চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক, ঠিকাদারসহ একাধিক কর্মকর্তা ও কয়েকজন সাবেক-বর্তমান ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়। একই অভিযোগের চিঠি পাঠানো হয় দুদকেও। পরে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৯ মার্চ কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ওই কমিটি।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :