কোটা সংস্কারের চূড়ান্ত ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সড়ক না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন কুড়িল বিশ্বরোড অবরোধ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
১৬ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে যমুনা ফিউচার পার্ক ও বসুন্ধরা গেটে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন নর্থসাউথ, এআইইউবি, আইইউবিসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
কয়েক শত শিক্ষার্থী কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাড্ডাগামী সড়ক বন্ধ করে সড়কে অবস্থান নেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবরোধে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে। সড়কে অবস্থান নিয়ে তারা আন্দোলনের সপক্ষে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে রাস্তার দুপাশে আটকা পড়েছে অসংখ্য যানবাহন।
এর আগে, ১৫ জুলাই দুপুরের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। কয়েক ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অনেকে আহত হন। সন্ধ্যার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। সেখানে অনেকে আহত হন।
এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে ১৬ জুলাই কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে গণআন্দোলনের ডাক দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
তা ছাড়া ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। তখন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা ছিল। সব মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ।
কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে ৪ জুলাই। রিট আবেদনকারীপক্ষ সময় চেয়ে আরজি জানালে সেদিন আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ৯ জুলাই আবেদন করেন দুই শিক্ষার্থী।
একুশে সংবাদ/ ঢা.পো./এসএডি
আপনার মতামত লিখুন :