AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চান না বেরোবি শিক্ষার্থীরা


Ekushey Sangbad
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
০১:৩৫ পিএম, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চান না বেরোবি শিক্ষার্থীরা

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ফখরুদ্দীন নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ১২ই অক্টোবর ‍‍`রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়‍‍` নামে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসলে ২০০৯ সালে বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামানুসারে বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর” নামকরণ করা হয়। দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টি আওয়ামী লীগ পন্থী শিক্ষকদের দখলে ছিল।

অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের সরকারের বিভিন্ন পদধারী নেতা কর্মীকে ও আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থীকেই বিভিন্ন সময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের অনেকই  করেছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণা। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভেঙে দ্বাদশ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম তুলতে দেখা গেছে আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামী গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমানকে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ জন উপাচার্য এসেছেন। কিন্তু কারো বিদায়ীই সম্মানের সহিত হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবু সাঈদ নিহতের ঘটনা ও সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে  সদ্য বিদায়ী উপাচার্য পদত্যাগ করলেও বাকি চারজন উপাচার্য বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের মুখে বিদায় নিয়েছেন।

যার ফলে উপাচার্যদের এমন কর্মকাণ্ড ও তার সাথে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান কোনো শিক্ষার্থীই নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য চান না।

একাদিক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন সবাই আওয়ামী লীগের আমলে। সবাই আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো ভাবেই সমর্থন দিয়ে আসছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরা নিজেদের চেতনায় একাদিক সংগঠনেরও জন্ম দেয়। সেখানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি,বঙ্গবন্ধু পরিষদ, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ,নীল দল, হলুদ দল সহ একাধিক সংগঠন তৈরি করে আওয়ামী সরকারের পাশে ছিল। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সীমাহীন দুর্নীতি সংস্কৃতি তৈরি হয়ে আসছে।

কেনো নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি চান না এমন জবাবে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রমজান আলী বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল না। আবু সাঈদ নির্মমভাবে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হত্যা করা হয়। কোনো শিক্ষক যদি ওই জায়গায় থাকত তাহলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটতো না।

ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী হেলাল মিয়া বলেন, দেশের এই পরিস্থিতে দরকার সৎ,যোগ্য ও নিরপেক্ষ মানুষ।কিন্তু দেখা যায় যারা সৎ,নিরপেক্ষ তাদের অনেকেরই উল্লেখ্যযোগ্য তেমন গবেষণা পত্র নেই,ডক্টরেট অথবা পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রিও নেই।আবার যাদের গবেষণাপত্র আছে,ডক্টরেট,পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি আছে তাদের মধ্যে অনেকেই আবার দল করা।যারা আবার দলের বাহিরে আছেন তারা  আবার অনেকেই শিক্ষকদের সাথে সম্পৃক্তহীন।এর বাহিরে যারা আছে তাদের শিরদাঁড় প্রশ্নবিদ্ধ। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা চায় বাহিরে থেকে সৎ,যোগ্য, নিরপেক্ষ ও মেরুদণ্ড যুক্ত মানুষ আমাদের ভিসি হয়ে আসুক।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার বলেন, আমরা শঙ্কিত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি আসলে তিনি তার সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন কিনা। সেই জন্য আমরা চাই এমন একজন মানুষ ভিসি হিসেবে আসুক যিনি শিক্ষিত, বাস্তববাদী ও একজন আর্দশ মানুষ। তিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অসমাপ্ত কাজ গুলো সমাপ্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর গাজী বলেন,ভিসি হবে মুক্তচিন্তার কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন মুক্ত চিন্তার শিক্ষককের বড্ড অভাব। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের গবেষণায় কেন কম বরাদ্দ দেওয়া হয় তা নিয়ে আন্দোলন করা উচিত সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দলের পাচাটা নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। যোগ্য কেউ আসুক ভিসি হিসাবে যিনি এই জেনারেশন টাকে বুঝবে যিনি হবে মুক্তচিন্তার।

নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি নিয়োগ না চেয়ে শিক্ষার্থীদের এমন ক্ষোভ কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন আবেগকে আমি সমর্থন করি কারণ শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আপন করে নিতে পারেনি। কিন্তু যদি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। দিন শেষে তার পালানোর সুযোগ নেই। চার বছর পর তাকে এখানে চাকুরী করতে হবে। যার ফলে তার জবাবদিহিতা স্থায়ী জবাবদিহিতা হবে। ফলে কোনো শিক্ষক,শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা কর্মসূচিকে চটিয়ে পিছন দরজা দিয়ে পালানোর পারবেন না।

তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ উপাচার্য এসেছেন কেউ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় কি ভালো চলেছে। চলেনি। পাঁচ পাঁচ বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি পাঁচ বারই ব্যর্থ হয়েছি।আর যাকে আমরা পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে দেই নাই।আমরা কি করে বলতে পারি একজন মানুষ ব্যর্থ হয়েছেন।


একুশে সংবাদ/ এস কে

 

 

Link copied!