খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনে ইনস্টিটিউট অব ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) বাংলাদেশ সেকশন এবং আইইইই সিগন্যাল প্রসেসিং সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এর যৌথ আয়োজনে সিগন্যাল প্রসেসিং, ইনফরমেশন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড সিস্টেমস ২০২৪ (স্পিক্সকন ২০২৪) শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন আজ ০১ নভেম্বর (শুক্রবার) শুরু হয়েছে।
সকাল ১০টায় ড. সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনের ইউআরপি লেকচার থিয়েটারে এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের চিফ প্যাট্রন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, গত দুই দশকে ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। ফলে আমরাও প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেছি। ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন বিষয়ে গবেষণার ক্ষেত্রটি এতটাই বহুমুখী হয়ে উঠেছে যে, এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি একজন নগর পরিকল্পনাবিদ হলেও কর্মজীবনের শুরুতে আইসিটিতে আগ্রহী ছিলাম। আমি জিআইএস বিষয়ে খুব উৎসাহী ছিলাম ও ২০ মেগাবাইটের হার্ড ড্রাইভসহ একটি এক্সটি কম্পিউটারের সাথে কাজ শুরু করেছিলাম। এখন আমার ছাত্ররা স্নাতক থিসিসে মেশিন লার্নিং নিয়ে কাজ করছে। এটা সত্যিই একটি অভূতপূর্ব যাত্রা। এই যাত্রা সম্ভব হয়েছে আইসিটি সেক্টরের কিছু গবেষক এবং উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে।
আমি মনে করি, এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার একটি মেলবন্ধন যা বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোর রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে ভূমিকা রাখবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসিই ডিসিপ্লিন ও আইইইই’র দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এই সম্মেলনের মাধ্যমে অর্জিত যে অভিজ্ঞতা তাকে ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়া কোলাবরেশনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাই। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এই রকম উদ্যোগের অংশীদার হতে পারলে আমি গর্ববোধ করবো। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষকদের একত্রিত করে এই মর্যাদাপূর্ণ আইইইই’র এই সম্মেলন আয়োজনের জন্য আমি ইসিই ডিসিপ্লিনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে স্পিক্সকন ২০২৪ এ অংশগ্রহণকারী অতিথি, মূল বক্তা, লেখক, পৃষ্ঠপোষকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান। তিনি বলেন, গবেষণায় জড়িত হওয়া ও ধারাবাহিক হওয়া সহজ কাজ নয়। গবেষকদের কাজের লক্ষ্য ও ফলাফল অর্জনের জন্য প্রচুর প্রচেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে আমাদের দেশে ফলপ্রসূ মানের গবেষণার জন্য তহবিলের সমস্যাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি গবেষণা ক্ষেত্রজুড়ে বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষতা ও উদ্ভাবন, জাতীয় সমস্যা ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ প্রশমনে অসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের কনফারেন্স কো-অর্ডিনেটর ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসিই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন আইইইই’র উইমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কমিটির চেয়ার ও বুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. সেলিয়া শাহনাজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইইইই সিগন্যাল প্রসেসিং সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এর চেয়ার ও বুয়েটের ইইই বিভাগের প্রফেসর ড. শেখ আ. ফাত্তাহ ও অনলাইনে যুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের চেয়ার ও চুয়েটের সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মশিউল হক। আরও বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম চেয়ার ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসিই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. শামীম আহসান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সম্মেলন আয়োজন কমিটির সেক্রেটারি ও ইসিই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. সেহরীশ খান। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়। এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২০০ জন দেশি-বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষক সরাসরি/ভার্চ্যুয়ালি অংশ নিচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :