বরাদ্দকৃত শ্রেণীকক্ষ বুঝে পাওয়ার দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগের অন্তত চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সোমবার রাত ৯ টার দিকে দুই জন ছাত্রী অসুস্থ হলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। দুপুর ৩ টা থেকে টানা অনশন চলায় রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। সর্বশেষ রাত দেড়টা পর্যন্ত অনশন চলমান রয়েছে এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীর সংখ্যা অন্তত চারজন বলে জানা গেছে।
এদিকে রাত ১২ টার দিকে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদেরকে মোবাইল ফোনে মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি করেন, কলা অনুষদের ডিন বারবারই আমাদেরকে এরকম আশ্বাস দিলেও কার্যত কোনো সমাধান না হওয়ায় আমরা তার পদত্যাগ চাচ্ছি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিন স্যার বারবার এরকম কেন করেন? তিনি আমাদেরকে বলেছেন, আমি তোমাদের রুমের ব্যাপারটা দেখবো। তোমাদের রুম না দিতে পারলে আমি পদত্যাগ করবো। কিন্তু আমরা তো এখনও রুম পেলাম না। তাহলে তিনি কেন পদত্যাগ করেন না? তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।
এরআগে, রাত সাড়ে ৮টায় ফোন কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ আগামীকাল মঙ্গলবার আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেয়নি। উপাচার্যের এ আশ্বাসকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে নির্দিষ্ট সমাধান না দেওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। রাত পৌনে ২টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অনশন চলমান রেখেছেন তারা।
এদিকে সোমবার বেলা ১১টা থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে দাবি আদায় না হওয়ায় বিকেল ৩ টা থেকে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর ও বিভাগের শিক্ষকরা তাদের দাবির বিষয়ে সমাধানের আশ্বাসে অনশন ভাঙার অনুরোধ জানালেও তারা অনশন চালিয়ে যায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এর আগেও অনেক আলোচনা হয়েছে। আমরা আলোচনা-আলোচনা খেলা চাই না। পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হলে আমরা এখান থেকে উঠবো না। আমাদের রুম আমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে। অবৈধ দখলকারীদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। নতুবা আমাদের অনশন চলমান থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর চারুকলা বিভাগকে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের চতুর্থ তলায় ২৩টি ও পঞ্চম তলায় ১টি কক্ষসহ ২৫টি কক্ষ বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগকে পঞ্চম তলায় ১৫টি ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগকে একই তলার ১৭টি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ফোকলোর স্টাডিজ ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ তাদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষে না গিয়ে পূর্বে থেকেই ব্যবহার করা চারুকলা বিভাগের নামে বরাদ্দকৃত কক্ষসমূহ ব্যবহার অব্যাহত রাখে। পরে বিজ্ঞপ্তি আকারে নির্দেশনা এলেও দখলকৃত কক্ষগুলো ছাড়তে নারাজ বিভাগ দুটি।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :