AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইবিতে সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রদের নীল সিনেমার তারকা সাজিয়ে র‍্যাগিং


Ekushey Sangbad
আবির হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
০২:৫৪ পিএম, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪
ইবিতে সিনিয়র কর্তৃক জুনিয়রদের নীল সিনেমার তারকা সাজিয়ে র‍্যাগিং

মধ্যরাতে জুনিয়রদের র‌্যাগিংয়ের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পাঁচ শিক্ষার্থী। সোমবার রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নং কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও ওই পাঁচ অভিযুক্তসহ অন্তত নয় জনের বিরুদ্ধে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের নীল সিনেমার তারকা (পর্ণ তারকা) সাজিয়ে অভিনয়ে বাধ্য করা, নীল সিনেমার তারকাদের নাম মুখস্থ বলা, অশ্লীল ভাষার কবিতা পাঠ, সিগারেট ও গাঁজা সেবনের অভিনয় এবং ফোন কলে সিনিয়র শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলানোর অভিযোগ উঠেছে। জুনিয়র শিক্ষার্থীরা (২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ) ক্যাম্পাসে আসার মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে অন্তত ৪/৫ বার ইমিডিয়েট সিনিয়রদের (২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষ) কয়েকজন কর্তৃক র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। 

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া, জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল ও ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া। এদের মধ্যে অভিযুক্ত সাব্বির, শেহান, লিমন, কান্ত ও সঞ্জয়কে র‍্যাগিং করা অবস্থায় হাতেনাতে ধরে সোমবার রাতে ইবি থানায় পুলিশি হেফাজতে সোপর্দ করা হয়েছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ভুক্তভোগীদের লালন শাহ হলের ৩৩০ নং কক্ষে ডাকেন অভিযুক্ত শেহান শরীফ শেখ। পরে ভুক্তভোগী সাইম, রাকিবুল, শামীম, রাকিব, হামজা, তারেক, রিশান, তানভীর এবং মামুনসহ ১২/১৩জন ওই কক্ষে যান। তারা সবাই ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে চারজনকে রেখে (শামীম, সাইম, রাকিবুল, হামজা) বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর অবশিষ্ট চারজনের উপর অভিযুক্ত সাব্বির ও সঞ্চয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। 

ভুক্তভোগী সূত্রে, সেখানে তাদের পাঁচ রকমের হাসি দেওয়া, কল দিয়ে বাজে ভাষা বলা ও বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে নাচতে বাধ্য করা হয়৷ পরে হলের সিনিয়র শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না উপস্থিত হয়ে তাদেরকে হাতেনাতে ধরেন। এরআগে, গত ১৬ নভেম্বর রাত এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ভুক্তভোগীরা সহ অন্তত বারো জন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা৷ এসময় তাঁদেরকে নীল সিনেমার তারকাদের নাম জিজ্ঞাসা, নীল সিনেমার তারকা সেজে অভিনয় করতে বাধ্য করা এবং অশ্লীল কবিতা পাঠে বাধ্য করা হয়। এছাড়াও তাদের কয়েকজনকে সিগারেট ও গাঁজা সেবনের অভিনয়, বিভিন্ন শারীরিক কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা, প্যাকের নামতা বলানো ও রিলেশনশীপের উপর এসাইনমেন্ট লিখতে বলা হয়। এসময় সেখানে অভিযুক্ত ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, সাব্বির, সাকিব, শেহান, কান্ত বড়ুয়া ও জিহাদ উপস্থিত ছিলেন। 

ভুক্তভোগী তারেক হোসাইন বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে আসার মাত্র ১৭ দিনের মধ্যে তারা যে কি পরিমাণ মানসিক নির্যাতন করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমাদের বিভিন্ন সময় কারণেঅকারণে ডেকে অনরবত পরিচয় দেওয়া, গালিগালাজ ও বিভিন্ন কাজে জোরজবরদস্তি করত। তাদের কথায় আমাদের উঠতে-বসতে হতো৷ কথা না শুনলে মারধরের হুমকিও দিত এবং প্রকাশের অনুপযোগী বিভিন্ন কথা বলতো। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অপর ভুক্তভোগী রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ক্যাম্পাসের শুধুর দিন থেকেই আমাদেরকে তারা ডেকে পরিচয় পর্বের নাম করে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছে। তারা আমাদের যেদিনই ডেকেছে যেকোনোভাবেই আমাদের ভুল ধরে হেনস্তা না করে ছাড়েনি। তাদের সঙ্গে হ্যাঁ বললেও বেয়াদবি, আবার না বললেও বেয়াদবি। 

অভিযুক্ত শরীফ শেহান বলেন, এই ঘটনায় আমি ওই কক্ষে ছিলাম না৷ তবে এরআগে গতদিন হাদি ও সাদী মেসে জুনিয়রদের সাথে আমরা বসেছিলাম। ওইদিন ভিসি, প্রক্টর স্যারের নামসহ বিভাগের সকল শিক্ষকের নাম জিজ্ঞাসা করা হয়। না পারলে তাদের একটু ধমকও দেওয়া হয়। তবে এসময় কাউকে মারধর বা শারীরিক নির্যাতন করা হয় নি। তবে বাকি অভিযোগগুলোর বিষয়ে কিছুটা সত্যতা রয়েছে বলেও জানান তিনি৷

লালন শাহ প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, অভিযুক্তদের থানায় রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সুপারিশ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র-উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসবো। বৈঠক শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ পাঁচজনকে থানায় সোর্পদ করেছে। তাদেরকে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা নেব।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!