কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) `ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ` নিয়ে সমন্বয়কদের একাংশ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ``ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও ভোজ` নিয়ে যারা বাধা দিয়েছিলো তারা কারা? কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম ভাইকে অবাঞ্ছিত করেছিলো তারা ক্যাম্পাসের আদু ভাই। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরূদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে পরবর্তীতে আমরা অবশ্যই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করবো। আর সেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম ভাইকেও নিয়ে আসবো।`
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী পাবেল রানা বলেন, প্রতিবাদের ভাষা আটকিয়ে রাখাও একধরনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, আমরাও জানতে চাই ২৪ এর স্বাধীনতার পরও কারা আমাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চায়। কেউ একজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে এসে বলতেই পারে আমি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম- কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম এর মানে তো এই না যাকে সে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে সে অবাঞ্ছিত হয়ে গেছে। কেউ একজন কিভাবে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক- কে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে পারে এবং সে কার ইন্দনে করেছে ? কোন দলের ইন্দনে করেছে আমরা জানি না, আমরা এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা ২৪ এর সূর্য সন্তান এবং যারা রক্ত দিয়েছে তারা আমাদের বীর সন্তান।
আয়োজনের অর্থের উৎস ও ব্যয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক জান্নাতুল ইভা বলেন, `গরু ভোজের জন্য আমরা কিছু ফান্ড কালেকশন করেছিলাম কিন্তু বিভিন্ন ইস্যুর কারণে আমরা সেটা করতে পারি নাই। তাই আমরা টাকাটা একজনের কাছে রেখেছিলাম৷ আর যার কাছে রেখেছিলাম সে আওয়ামীর কেউ না সে অন্য ব্যানারের সেটা আপনারা জানেন বা জেনে নিবেন৷ তিনি আমাদেরকে আন্দোলনের প্রথম থেকে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করে এসেছেন তাই বিশ্বস্ততার খাতিরে আমরা তার কাছে টাকাটা রেখেছিলাম।`
তবে অর্থের যথাযথ হিসাব তাদের কাছে আছে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে সে হিসাব তারা দিতে পারে নি। সেক্ষেত্রে জান্নাতুল ইভা বলেন, `আমাদের হিসাবের এখনো কিছু অংশ বাকি আছে৷ সবটা শেষ হলে আমরা দিতে পারবো।`
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি নিয়ে সমন্বয়ক ইমরান হাসান বলেন, `সকল প্রকার অন্যায় অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমরা সদা প্রস্তুত। আমাদের পরবর্তী সকল প্রোগ্রামে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং সেই সাথে জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম ভাইকে নিয়েই করবো। সঠিক তথ্য না যেনে সোশ্যাল মিডিয়াতে গুজব না রটানোর জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।`
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) `ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও ভোজ` এর আয়োজন করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি অনিবার্য কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শুক্রবার বেলা ১২ টা থেকে রবিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে রাতে, এক পক্ষ এই কার্যক্রমের বিরোধিতা করে রাত ৮ টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় সমন্বয় তারিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। সংবাদ সম্মেলন শেষে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খানকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয় এক অংশ। পরবর্তীতে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়ে যায়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :