শ্রেণিকক্ষ সংকট, সেশনজট, শিক্ষক সংকট সহ বিভাগ সংস্কারের ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ওই বিভাগের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় তারা দাবি সম্বলিত বিভিন্ন ধরনের স্লোগান ও প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন। পরে দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগের শিক্ষকরা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
ক্যাম্পাস সূত্রে, বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি নিয়ে শনিবার সকাল আটটায় বিভাগে তালা দেয় সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে সকাল নয়টায় প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয় তারা। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নির্দিষ্ট রুটিন প্রণয়ন এবং প্রতিটি কোর্সের ন্যূনতম ক্লাস নেওয়া, সেশনজট নিরসনে তিন মাসের মধ্যে প্রতি সেমিস্টারের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন, আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পূর্নাঙ্গ একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া, পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করা, সেমিনার লাইব্রেরী বরাদ্দ, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার আগে ইনকোর্স পরীক্ষা নিয়ে নম্বর প্রকাশ করা, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলমকে সমাজকল্যাণ বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া, প্রতি বছর শিক্ষাসফরে বিভাগের অর্থায়ন থাকতে হবে এবং আন্দোলনের পরে কোনো শিক্ষার্থীর উপর যেন এর প্রভাব না পড়ে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।
বিভাগের শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শ্রেণিকক্ষ না থাকার অযুহাতে ঠিকমতো ক্লাস না নেওয়া, দুই ঘন্টা দেরিতে ক্যাম্পাসে এসে আবার দুই ঘন্টা আগেই ক্যাম্পাস ছাড়া, পর্যাপ্ত ক্লাস না নিয়েই কোর্স সম্পন্ন করা, রেজাল্ট দিতে দেরি করা এবং এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে শিক্ষার্থীদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদেরকে অনেক আশ্বাস দিয়েও প্রশাসন কথা রাখেনি। আমরা আজ বাধ্য হয়েই মাঠে নেমেছি। আমাদের সাতটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র একটা ক্লাসরুম। পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় আমরা সেশনজটের কবলে পড়ে ধুকছি। কিন্তু প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেই। আমরা অতিদ্রুত আমাদের সকল সমস্যার সমাধান চাই।
এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সমস্যা নিরসনের রোডম্যাপ সম্বলিত পত্রে স্বাক্ষর করেন বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আসমা সাদিয়া রুনা। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীরা দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পাবে। আশা করছি, খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা সকল সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এয়াকুব আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের সকল দাবি যৌক্তিক। অনতিবিলম্বে সেগুলো পূরণ করা হবে। কোষাধ্যক্ষ তাদের বিষয়গুলো দেখবেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আজ থেকেই তাদের সকল দাবি পূরণে কাজ শুরু হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিভাগের সকল সমস্যা সমাধান হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :